পিছিয়ে পড়া আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকা। সেখানে কারও বাবা, আবার কারও মা দিনমজুরের কাজ করেন। সংসারে কার্যত নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। এই সমস্ত এলাকার পিছিয়ে পরা ছাত্র-ছাত্রীদের সম্পূর্ণ নিখরচায় পড়াশোনা করিয়ে সুশিক্ষিত করে তুলতে এলাকায় রাস্তার ধারে দেওয়ালে-দেওয়ালে তৈরি করা হয়েছে ব্ল্যাকবোর্ড। সেখানেই চলছে ত্রিস্তরীয় শিক্ষা পদ্ধতি।
আরও পড়ুনঃ রাতের অন্ধকারে ধুন্ধুমার ‘অ্যাকশন’! পুলিশ-র্যাফের অভিযানে আটক ৮, জলপাইগুড়িতে হঠাৎ কী হল?
advertisement
শিক্ষক দীপ নারায়ণ নায়েক বলেন, ‘আমরা গ্রামের দেওয়ালগুলিকে ব্ল্যাকবোর্ডে পরিণত করেছি এবং রাস্তাগুলিকে শ্রেণিকক্ষে পরিবর্তন করেছি। এক-একটি গ্রামকে এক-একটি স্কুলের মতো করে তৈরি করা হয়েছে। এখানে শিক্ষকের ভূমিকা পালন করছে ছাত্ররাই। যখন বাচ্চারা তাঁদের মায়েদের শেখাচ্ছে তখন মায়েরা অনেক আনন্দিত হয়ে শিখছেন’।
আসানসোল মহকুমার অন্তর্গত নামু জামডোবা আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকা। এখানে পিছিয়ে পড়া ছাত্র-ছাত্রীদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে এক অভিনব উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন শিক্ষক দীপ নারায়ণ নায়েক। পেশায় তিনি জামুরিয়া নামুপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। স্কুলের শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি এলাকায় এলাকায় পিছিয়ে পড়া ছাত্র-ছাত্রীদের সম্পূর্ণ নিখরচায় শিক্ষাদান করেন। সেই এলাকাগুলিতে এমন এক শিক্ষাদানের পদ্ধতি চালু করেছেন যেখানে গেলে আপনি দেখতে পাবেন রাস্তার ধারে দেওয়ালগুলি ব্ল্যাকবোর্ড এবং অক্ষর মালা দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
প্রত্যেকদিন বিকেল পাঁচটা হলেই ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে মা-বাবা, এমনকি ঠাকুরদা-ঠাকুমাও উপস্থিত হচ্ছেন। সেখানেই দীপনারায়ণবাবু প্রথমে ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাদান করেন এবং পরবর্তীতে সেই ছাত্র-ছাত্রীরা তাঁদের মা-বাবা ও ঠাকুরদা-ঠাকুমাকে শিক্ষাদান করেন। এইভাবে তিনটি স্তরে শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করেছেন এই শিক্ষক। স্বাভাবিকভাবেই বাচ্চাদের মা-বাবারা আনন্দের সঙ্গে তাঁদের ছেলেমেয়েদের থেকে শিক্ষা নিচ্ছেন। নিরক্ষর থেকে সাক্ষর হচ্ছেন। দীপ নারায়ণবাবুর এই উদ্যোগ এলাকাগুলিতে ভাল সাড়া পেয়েছে। মানুষ এই অভিনব উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়েছেন।