অভাবের সংসার হলেও, ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতম জিনিসের উপর ছবি আঁকার শিল্পকে ছাড়তে পারেননি কোনও ভাবেই। এর আগেও তিনি চাল, ডাল, বিভিন্ন বীজের উপর ছবি ফুটিয়ে তুলেছিলেন। উল্লেখ্য, চুলের উপরেও এ- টু-জেড এবং পোস্ত দানার উপর ভারতীয় পতাকা একে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন এই শিল্পী। যে শিল্পকর্ম খালি চোখে দেখা যায় না বললেই চলে, যা দেখতে দরকার পড়ে আতসকাঁচের।
advertisement
আরও পড়ুন: পুজোয় এবার মদ কিনতে বিরাট সমস্যা হবে? লোকসানের আশঙ্কায় পুলিশের দ্বারস্থ আবগারি দফতর
তবে এবার চ্যালেঞ্জটা ছিল আরও কঠিন। আর এই চ্যালেঞ্জেও সাফল্যের সঙ্গেই উত্তীর্ণ হয়েছেন শিল্পী বাসুদেব পাল। ইতিমধ্যেই তার তৈরি এই সন্দেশের দুর্গার ছবি ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। বাসুদেব বাবু জানান, চাল, ডালের উপর ছবি আঁকা তুলনামূলক কম কঠিন কারণ তাতে রঙ ধরে। কিন্তু ছানার সন্দেশে তুলি দিয়ে রঙ দিলেই গলে যায়। এই শিল্পকর্ম ফুটিয়ে তুলতে গিয়েও বেগ পেতে হয় শিল্পীকে। তবে হাল ছাড়েননি কোনও ভাবেই।
আরও পড়ুন: বিমানের শৌচাগারে ‘সন্দেহজনক’ বস্তু! বোমাতঙ্কে জরুরি অবতরণ, শেষে যা উদ্ধার হল কল্পনাতীত
অবশেষে তিনি মাত্র পৌনে এক গ্রাম সন্দেশের উপর এঁকে ফেলেছেন মা দুর্গা। বাসুদেববাবু বলেন, নতুন কিছুর উপর ছবি আঁকার ইচ্ছে হয়েছিল। তাই বাজার থেকে কিনে আনা সন্দেশের টুকরো, যা ছিল মটর ডালের থেকেও ছোট। আর তাকেই ক্যানভাস করে মা দুর্গার ছবি এঁকে ফেলেন তার হাতের ছোঁয়ায়। প্রথমের দিকে সন্দেশের উপর ফেব্রিকের রঙ লাগালেই তা গলে যাচ্ছিল। ফলে অনেকটা সতর্ক হয়েই, কষ্ট করে রং ধরাতে হয় ছানার সন্দেহের উপর। শুধু তাই নয়, সন্দেশে পিঁপড়ের উপদ্রব থেকে বাঁচাতে বিশেষ প্রক্রিয়ায় রাখা হয়েছে এই শিল্পকর্মকে বলে জানান শিল্পী।
ইতিমধ্যেই এ ধরনের কাজ করে শিল্পী বাসুদেব পালের ঝুলিতে এসেছে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস। তবে আর্থিক সামর্থ্য না থাকার কারণে অধরাই রয়ে গিয়েছে গিনিস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম তোলা। তাই শিল্পী চেষ্টা করে যাচ্ছেন বিশেষ কোনও শিল্পকর্ম ফুটিয়ে তুলে যাতে গিনিস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে ওঠে তাঁর নাম। আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া বাসুদেববাবুর প্রিন্টিংয়ের কাজ করে চালান সংসার।
এদিন অশোকনগরের মানুষ তাঁর শিল্পকর্ম সম্বন্ধে জানলেও, একদিন সারা দেশ এমনকী বিশ্বের মানুষও জানবেন বাসুদেব বাবুর এই ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতম শিল্পের কাজ। আর সেই আশাতেই একের পর এক শিল্পকর্ম ফুটিয়ে তুলে নিজেকে প্রস্তুত করে তুলছেন গিনিস বুক অফ ওয়ার্ল্ডসে নাম তোলার জন্য।
Rudra Narayan Roy