বিদ্যুতের পোল থেকে কালো তার মাটির তলা দিয়ে নিয়ে গিয়ে জ্বালানো হচ্ছিল আলো, পাখা। মিটারের সঙ্গে সেই তারের কোনও সংযোগ নেই। সেই তারের মাধ্যমেই বাড়ির প্রতিটি ঘরে আলো জ্বলছে। অন্যান্য ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রীও দিনরাত চালানো হচ্ছে। কিন্তু বিল উঠছে না।
আরও পড়ুন: বর্ধমানে ভাঙা হচ্ছে পুরনো রেল ওভারব্রিজ, কী কী সুবিধা হবে দেখে নিন
advertisement
গলসির বোমপুর গ্রামে এই পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ চুরির ঘটনায় অবাক বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকরা। গলসির বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিক সুবীর বিশ্বাস বলেন, ইলেক্ট্রিক পোল থেকে নিখুঁতভাবে তার নামানো হয়েছে। তবে এই কাজ যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ। এই ভাবে তার নিয়ে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা প্রবল থাকে।
বিদ্যুৎ দফতরকে ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, দেড় হাজার টাকার বিনিময়ে এলাকারই একজন এই কাজ করে দিয়েছে। মেয়ের বিয়ে রয়েছে। সেই কারণে তিনি এই পন্থা নিয়েছেন। বিদ্যুৎ দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ওই ব্যক্তির আর্থিক অবস্থা যথেষ্ট ভাল। জমি রয়েছে। তা ছাড়া মেয়ের বিয়ের জন্য বিদ্যুৎ চুরি করতে হবে, এই কথার কোনও যুক্তি নেই।
আরও পড়ুন: চায়ের দোকানে হুড়মুড়িয়ে ঢুকে গেল বালি বোঝাই লরি! তারপর...বর্ধমানে হাড়হিম ঘটনা
দফতরের আধিকারিকরা বলছেন, বিদ্যুৎ চুরির প্রবণতা রয়েছে দীর্ঘদিন ধরেই। গ্রামীণ এলাকায় হুকিং করে বিদ্যুৎ চুরির চল দীর্ঘদিনের। ব্যাপক বিদ্যুত চুরি হয় সাবমার্সিবেল পাম্পে। প্রত্যন্ত গ্রামে বিয়ে থেকে শুরু করে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে হুকিং করে বিদ্যুৎ চুরি করে আলো জ্বালানো হয়। আগে মিটার বক্সেও নানান কারচুপি করা হতো। এখন ডিজিটাল মিটার হওয়ার পর সেই প্রবণতা কমানো গিয়েছে। আগে আর্থিকভাবে দুর্বল পরিবারগুলির একটা অংশ এই চুরির পথ নিত। এখন আর্থিক ভাবে স্থিতিশীল অনেক পরিবারগুলিও অভিনব পদ্ধতিতে হুকিং করছে।
বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত এক বছরের গলসিতে ১৩০টি বিদ্যুৎ চুরির ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। চুরি রুখতে জেলা জুড়েই লাগাতার অভিযান চলছে। এছাড়া মঙ্গলকোট, আউশগ্রাম, মেমারি, গলসি সহ বিভিন্ন ব্লকে বিদ্যুৎ চুরির জন্য মোটা টাকা জরিমানা করা হয়েছে।