এটি একটি প্রাচীন এবং পুরনো খেলনা৷ শুকনো তালপাতা দিয়ে তৈরি। একদিকে পুরুষ ও একদিকে মহিলার অবয়ব। মেম ও সাহেব বলেও অবিহিত। বিশেষ করে পাড়া-গ্রামে শিশুদের কাছে চিত্তাকর্ষক এই খেলনা৷ তবে এটিকে নিছক একটা খেলনা বলা যায় না৷ এটি এক অনন্য শিল্প৷ তালপাতার সেপাই হল এক স্মৃতিকথা, এক উপন্যাস, এক সাহিত্য৷ যা ছেলেবেলার কথা মনে করিয়ে দেয়৷ একসময়, গ্রামের মেলাগুলিতে, অথবা পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে ঘুরেও ফেরিওয়ালারা বিক্রি করতেন তালপাতার সেপাই।
advertisement
আরও পড়ুন : নেটওয়ার্ক ছেড়ে প্রকৃতির কোলে ফেরা! নেটদুনিয়ার মাঝেও জগৎটাকে নতুনভাবে দেখার সুযোগ
শপিং মল, খেলনা হাউস প্রভৃতি অত্যাধুনিক খেলনার ছড়াছড়ি। ফলে হারিয়ে যাওয়া হারিয়ে যেতে বসা খেলনাগুলি থেকে দূরত্ব বাড়ছে শিশুদের৷ সেই জায়গায় তালপাতার সেপাই আজও প্রাসঙ্গিক। অজয় নদের তীরে বর্ধিঞ্চু রায়পুর গ্রাম৷ একদা এই গ্রামের সিংহ পরিবারের কাছ থেকেই জমি পেয়েছিলেন মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর৷ সেই জমিতেই গড়ে উঠেছে শান্তিনিকেতন। যা আজ ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’। এই গ্রামের বাসিন্দা গৌরাঙ্গ দাস আজও এই ঐতিহ্যবাহী খেলনা শিল্পকে ধরে রেখেছেন৷ তাঁর হাত ধরে অনেকেই শিখেছেন।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
কাঁচা তালপাতা প্রথমে কিছুটা শুকিয়ে নিতে হয়৷ সেই শুকনো তালপাতা জলে ভিজিয়ে কাঁচি দিয়ে মানব দেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ন্যায় কাটতে হয়৷ শিল্পী গৌরাঙ্গ দাস জানান, তালপাতার সেপাই হল ২২ টি খণ্ডে বিভক্ত, ১৪ টি সেলাই ও ২৮ টি গিট থাকে৷ ১ কাঠির ওপর একদিকে পুরুষ ও একদিকে মহিলার মুখ রঙ দিয়ে আঁকা হয়।কাঁঠিটি হাত দিয়ে ঘোরালেই হাত-পা নাড়িয়ে মানুষের অবয়ব গুলি নড়াচড়া করে৷ যা দেখতে অনবদ্য৷ আর খেলনা শিশুমনকে আকৃষ্ট করে৷ একটি তালপাতার সেপাই বানাতে কমপক্ষে ৩০ মিনিট লাগে৷ তবে একসঙ্গে অনেকগুলি ভাগে কাজ হলে সময় কিছুটা বাঁচে৷ একটি তালপাতার সেপাইয়ের দাম ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত৷