দুর্গাপুজোর কয়েকদিন আলোক সজ্জায় আচ্ছন্ন হয়ে থাকে গোটা সুরুল রাজবাড়ি। সুরুলে সরকার বাড়ির পুজো নামে খ্যাত এই শারদোৎসবে এক সময়ে অংশগ্রহণ করতেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে শুরু করে বহু গুণীজনেরা। সারা বছর যেমনই থাক, পুজোর দিনগুলোয় একেবারে অন্য সাজে সেজে ওঠে এই রাজবাড়ি। তবে এই সুরুল রাজবাড়ির ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, অষ্টাদশ শতকের প্রথম দিকে বর্ধমানের নীলপুর থেকে ভরতচন্দ্র সরকার এই গ্রামে প্রথম পা রাখেন।
advertisement
প্রথমে এখানকার বাসিন্দা বাসুদেব ভট্টাচার্যের বাড়িতে আশ্রয় নেন তিনি। এরপরে গড়ে তোলেন নিজের বসতবাড়ি। ভরতচন্দ্রের আমল থেকেই এই বাড়িতে দুর্গাপুজো শুরু হয়। তাঁর পুত্র কৃষ্ণহরির সন্তান শ্রীনিবাস ইংরেজদের সঙ্গে নানা ব্যবসার কাজে যুক্ত ছিলেন। সেই সূত্রে সাহেব মহলে বেশ খ্যাতি ও সুনাম অর্জন করেন তিনি। জাহাজের পাল তৈরির কাপড় এবং নীল চাষের ব্যবসায় সঙ্গে যুক্ত ছিলেন শ্রীনিবাস।
তবে সুরুল রাজবাড়ির দুর্গাপুজোর এত জনপ্রিয়তার পিছনে এক অন্যতম কারণ রয়েছে। কারণ রথের দিন থেকেই এখানে শুরু হয় প্রতিমা গড়া। এখানে দুর্গাকে দেখা যায় ডাকের সাজে। প্রায় ৩০০ বছরের পুরনো অস্ত্র তুলে দেওয়া হয় মা দুর্গার হাতে। পুজোর দিনগুলোয় সাজানো হয় পারিবারিক সোনার গয়নায়। শারদীয়ার শুরু থেকেই সুদূর বেলজিয়াম থেকে আনা নজরকাড়া ঝাড়বাতির আলোয় সেজে ওঠে রাজবাড়ির প্রতিটি অংশ। যে বিষয়টি সবার নজর কাড়ে, তা হল– রাজবাড়িতে পুজোর ক’দিন কোনও রকম বৈদ্যুতিক বাতির ব্যবহার হয় না। গোটা রাজবাড়ি আলোকিত হয় মোমবাতির নরম আলোয়। তাই এবার পুজোয় অন্ততপক্ষে একদিনের জন্য হলেও ঘুরে আসুন এই রাজবাড়ি থেকে।