সময়ের সঙ্গে সর্বজনীনের চেহারা নিয়েছে এসব সাবেক পুজো। তবে বিসর্জনই এই দুই বোনের পুজোর মূল আকর্ষণ। ধোপাপাড়ার সিংহবাহিনী পুজোর বয়স আনুমানিক প্রায় হাজার বছরের কাছাকাছি। কথিত আছে, সেই সময় তালপাতার ছাউনি গড়ে মৃন্ময়ী মূর্তির আরাধনা করতেন মুনি, ঋষিরা। আনুমানিক বাংলার ১৩৫৭ সালে পুজোর দায়িত্বভার নেন নলহাটির ধরমপুর গ্রামের রাধাশ্যাম ভট্টাচার্য। এরপরে তিনি গ্রাম থেকে এসে নলহাটিতে মন্দির বানিয়ে পুজো চালিয়ে যান। অর্থাভাবে দু’বছর চলার পর পুজো বন্ধ হয়ে যায়।
advertisement
আরও পড়ুন : বাঘের আক্রমণে পরিবার হারানো মহিলারা শপথ নিলেন সুন্দরবন রক্ষার, জঙ্গল ছেড়ে ভরসা হয়ে উঠছে নতুন জীবিকা
মন্দির লাগোয়া এলাকায় অভয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারের বাস। অভয়বাবুর কোনও সন্তান ছিল না। সেসময় তিনি মায়ের কাছে সন্তান চেয়ে মানত করেন। সেই বছরই তিনি মায়ের জন্য একটি পাকা মন্দির নির্মাণ করে পুজো শুরু করেন। পরবর্তীকালে অভয়বাবু তিন পুত্র ও দুই কন্যার পিতা হন। সেই থেকে বহু মানুষ সন্তান লাভের আশায় মায়ের কাছে এখানে মানত করেন। জনশ্রুতি, একসময় পুজোর সামগ্রী মা নিজেই জুটিয়ে নিতেন। পঞ্চমীর দিন নিষ্ঠার সঙ্গে পুজোর সামগ্রী চেয়ে স্থানীয় হাজার পুকুরে মায়ের আরাধনা করা হত। ষষ্টীর সকালে সেই পুকুরপাড়েই মিলত পুজোর সামগ্রী। পুজো শেষে সেই সামগ্রী ফের পুকুরের জলেই বিসর্জন দেওয়া হত।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
বর্তমানে এই পুজো চালিয়ে আসছেন প্রয়াত অভয়বাবুর তিন ছেলে দুর্গা, বাম ও শ্যাম। নলহাটির কামারপাড়ায় আরও এক সিংহবাহিনীর মায়ের পুজো হয়ে আসছে। কথিত আছে, কামারপাড়ার মা ছোট বোন। তান্ত্রিক মতে সপ্তমীর দিন ধোপাপাড়ার সুসজ্জিত শোভাযাত্রা বাজনা সহযোগে সকালে হাজরা পুকুরে কলাবউ স্নান ও ঘট ভরে নিয়ে আসা হয়। পিছনে পিছনে আসেন ছোট বোন। ঘট ভরে এনে প্রথমে বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের পুজো হয়। তারপর ছোট বোনের। বিজয়া দশমীর দিন দুই বোনকে কাঁধে করে নাচতে নাচতে নলহাটি শহর প্রদক্ষিণ করা হয়। এই নিরঞ্জন দেখতে হাজার, হাজার ভক্তের সমাগম হয় নলহাটিতে।