পুজো মানেই একটা আলাদা অনুভূতি। আর সেই পুজো যদি হয় ঐতিহাসিক তাহলে তো আর কথাই নেই। রামব্রহ্ম চক্রবর্ত্তী শোভাবাজার রাজবাড়ির প্রধান পুরোহিত ছিলেন। তিনি এবং তাঁর দশ ছেলে মিলে ঘট পুজোর মাধ্যমে শুরু করেছিলেন এই পুজো।
আরও পড়ুনঃ ৩৫০ বছরে দেবী রূপের বদল নেই! ভেঙেছে নাট মন্দিরের একাংশ, তবু রীতিনীতি মেনেই পটেশ্বরীর পুজো
advertisement
ইংরেজ আমলে দেশে যখন স্বদেশী আন্দোলনের জোয়ার। দিকে দিকে বর্জন করা হচ্ছে বিদেশী পণ্য। পিছিয়ে ছিল না এই পুজো। তখন ঠাকুরের গায়ের রেশমের পোশাক বর্জন করে মাটির সাজ নিয়ে আসা হয়। তখনই এই পুজো আরও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এলাকায়।
এই বাড়ির সদস্য গান্ধিজির শিষ্য এলাকার স্বাধীনতা সংগ্রামী ললিত মোহন চক্রবর্তী স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে জেলে গিয়েছিলেন। তাঁকে জেল থেকে ছাড়িয়ে ষষ্ঠীর দিনে বাড়িতে নিয়ে এসেছিলেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস।
প্রায় ১৪৪ বৎসর আগে টোলের পন্ডিত রামব্রহ্ম চক্রবর্ত্তীর জ্ঞানে মুগ্ধ হয়ে তাঁকে নন্দী উপাধিতে সম্মানিত করেছিলেন নবাব আলীবর্দী খাঁ। তাঁকে ৩০০ বিঘা জমিও দান করেন নবাব। সেই থেকে ডায়মন্ড হারবারের নেতড়া গ্রামের চক্রবর্তী পাড়ার পুজো আজও নন্দীপাড়ার পুজো হিসেবে পরিচিত।
কলকাতার শোভাবাজার রাজবাড়ির প্রেরণায় পটে আঁকা ছবি দিয়ে ঘট পুজোর মাধ্যমে দেবীর আরাধনা শুরু হয় চক্রবর্ত্তীর বাড়িতে। মূল পুজোর ১৭ দিন আগে থেকে শুরু হয় এই পুজোর বোধনের কাজ। এখনও এই নিয়মে চলে পুজো। এই পুজো জুড়ে দেয় অতীত ও বর্তমানের সমস্ত ইতিহাস এমন কথা জানিয়েছেন চক্রবর্ত্তী বাড়ির সদস্য শান্তনু চক্রবর্ত্তী। পুজোর সময় এখানে পরিবারের সদস্যদের মহামিলন ঘটে বলে জানিয়েছেন তিনি। ইতিহাসের সাক্ষী হতে এবছর ঘুরে আসতেই পারেন চক্রবর্ত্তী বাড়ি থেকে।