জনশ্রুতি, বর্ধমান রাজ পরিবারের বংশধর শান্তিরাম রায়। তিনি দেশ-বিদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য করতেন। একদিন নৌকা নিয়ে রূপনারায়ণ নদীপথে বাণিজ্য করতে যাচ্ছিলেন। সেইসময় আমতার জয়পুরের অমরাগড়ী গ্রামে নোঙর করে রাত্রিবাস করেন। সেদিন রাত্রে গজলক্ষ্মী মাতার স্বপ্নাদেশ পান শান্তিরাম। সেই মোতাবেক ওই এলাকায় গজলক্ষ্মী মাতার পুজো শুরু করেন ও মন্দির গড়ে তোলেন। পাশাপাশি, শুরু হয় দুর্গাপুজো, রথযাত্রা, রাস সহ নানা উৎসব। দেবীর আরাধনার পাশাপাশি ওই এলাকায় জনবসতি গড়ে তুলতে ও এলাকার সার্বিক উন্নয়নে শান্তিরাম নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেন। মাঝে অনেক গুলো বছর কেটে গিয়েছে।
advertisement
আরও পড়ুন:
কালের অমোঘ নিয়মে টেরাকোটার তৈরি গজমাতা মন্দিরের আজ জীর্ণ দশা। পাশেই গড়ে উঠেছে দুর্গা দালান। সেই ঠাকুর দালানেই মা’য়ের পুজো হয়। সেখানেই একচালা প্রতিমা গড়ার কাজ চলছে। পুজো প্রায় কুড়ি বাইশ দিন বাকি, প্রতিমা তৈরি প্রায় শেষের দিকে। রীতিনীতিতে আজও অটুট রায় পরিবারের তিনশ বছরেরও বেশি প্রাচীন এই দুর্গাপুজো। পুজোর জন্য তৈরি হয় হাজার হাজার নাড়ু। থাকে নানা উপাচার।
আরও পড়ুন: চুল থেকে চোখ! নিয়মিত পালং শাক খেলেই শরীরে ঘটবে ম্যাজিক! জানুন
তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বলিপ্রথা বন্ধ হয়েছে। কর্মসূত্রে বাড়ির অনেকেই বাইরে থাকলেও সকলেই পুজোর ক’টা দিন গ্রামের বাড়িতে এসে একসঙ্গে মিলিত হন। বাইরে থেকেও অজস্র মানুষ এই পুজো দেখার টানে ছুটে আসেন। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ঐতিহ্যকে ধরে রাখলেও মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পুজোর বিপুল খরচ। রায় পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, আর্থিক সমস্যার কারণে পুজোর জাঁকজমক অনেকটাই কমেছে। মূলত গজলক্ষ্মী মাতা এস্টেট কমিটিই পুজোর খরচ বহন করে। জাঁকজমকে খানিকটা ভাটা পড়লেও আজও ঐতিহ্য, রীতিনীতি ও আন্তরিকতায় অটুট অমরাগড়ী রায় পরিবারের দুর্গাপুজো।
রাকেশ মাইতি