TRENDING:

Folk Culture: হারিয়ে যেতে বসা ভাদু গান শোনা গেল মঙ্গলকোটে, পুরনো ঐতিহ্য বজায় রেখেছেন কাটোয়ার এই গ্রামের মানুষ 

Last Updated:

Folk Culture: বাংলার লোকসংস্কৃতির ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে আছে নানা উৎসব, নানা গান। তার মধ্যেই অন্যতম হল ভাদু গান। 

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
বনোয়ারীলাল চৌধুরী, মঙ্গলকোট: বাংলার লোকসংস্কৃতির ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে আছে নানা উৎসব, নানা গান। তার মধ্যেই অন্যতম হল ভাদু গান। একসময় ভাদ্র মাস শুরু হলেই বাংলার গ্রামেগঞ্জে প্রতিধ্বনিত হতো এই গানের সুর। ভাদু দেবী বা ভাদুমণিকে কেন্দ্র করে গাওয়া এই গান মূলত কন্যাদের উৎসব। বলা হয়, প্রাচীন কালে ভাদ্র মাসে নবজাতক কন্যার কল্যাণ ও দীর্ঘায়ু কামনা করেই শুরু হয়েছিল ভাদু পূজা। সেইসঙ্গে মেয়েদের আনন্দ-আড্ডা আর নাচ-গানের মাধ্যমে এই উৎসব গ্রামবাংলার সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠে। যদিও এই ভাদু গানকে ঘিরে নানা মত প্রচলিত আছে। তবে বর্তমানে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যেতে বসেছে এই ঐতিহ্য। ভাদু গান আজ আর আগের মতো জনপ্রিয় নয়। পূর্ব বর্ধমানের গ্রামেগঞ্জেও যে উৎসবমুখর ভাদু দলের আনাগোনা দেখা যেত, আজ তা অনেকটাই ফিকে।
advertisement

তবে সম্প্রতি এক অন্য ছবি দেখা গেল মঙ্গলকোটের নিগন বাসস্ট্যান্ডে। সেখানে হঠাৎই দেখা মিলল একটি ভাদু দলের। তাঁদের সুরেলা কণ্ঠে যখন ভাদু গান ভেসে উঠল, তখন চারপাশে ভিড় জমালেন অসংখ্য মানুষ। কারও হাতে মোবাইল ক্যামেরা, কেউবা মগ্ন হয়ে গেলেন স্মৃতিচারণায়। পুরনো দিনের হারানো গানের সুর শুনে অনেকেই আবেগে ভেসে গেলেন। ভাদু দলের সদস্য নির্মল মণ্ডল বলেন, “আমরা সবাই চাষবাস করে খাই। সাধারণ ভাবে বিকেলের দিকেই গান গাইতে বেরোই। আজ মন হল তাই সকালে বেড়িয়েছি। আমরাও আনন্দ পাই আবার গান গেয়ে সাধারণ মানুষকেও আনন্দ দিই। ভাদ্র মাসের শেষ অবধি এই গান আমরা করব।”

advertisement

ভাদু দলের সদস্যরা জানালেন, তাঁরা কাটোয়া ১ নম্বর ব্লকের বাননাগরা গ্রামের বাসিন্দা। মোট ১০ জন রয়েছেন এই দলে। ভাদ্র মাসের শুরু থেকেই তাঁরা বেরিয়েছেন গান গাইতে। প্রতিদিন বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে তাঁরা গাইছেন ভাদুমণির গান। তাঁদের সঙ্গে রয়েছে ছোট স্পিকার, মাইক্রোফোন, শ্রীখোল আর খঞ্জনি। শুধু তাই নয়, কেউ কেউ মজার সাজে সেজে নেচে-গেয়ে আরও আনন্দ দিচ্ছেন সাধারণ মানুষকে।

advertisement

দলের সদস্যদের কথায়, ভাদু গান করার পিছনে তাঁদের কোনও স্বার্থ নেই। নিঃস্বার্থভাবেই তাঁরা এই অনুষ্ঠান চালিয়ে যাচ্ছেন শুধু পুরোনো ঐতিহ্যটিকে টিকিয়ে রাখার জন্য। তাঁদের বিশ্বাস, ভাদুমণির স্মৃতি ও বাংলার এই লোকসংস্কৃতি যাতে নতুন প্রজন্ম জানতে পারে, তাই তাঁদের এই প্রয়াস।

আরও পড়ুন : রাত পোহালেই রাধাষ্টমী! একটু হলেও মুখে দিন এই ‘ফল’! পুজোয় নিবেদন করুন এই ‘হলুদ ফুল’! বিপদ কেটে অর্থ ও সৌভাগ্যে ভরে থাকবে জীবন

advertisement

ভাদ্র মাসের দু’মাস আগে থেকেই তাঁরা গানের অনুশীলন শুরু করেছিলেন। লেখকের কাছ থেকে গান কিনে এনে দীর্ঘদিনের প্রস্তুতির পরই তাঁরা পথে নামেন। একসময় ভাদ্র মাস এলেই ভাদু দলের লোকেরা গ্রাম থেকে গ্রামে ঘুরে বেড়াতেন, আর মাসশেষে ঘরে ফিরতেন। আজ সেই ছবি প্রায় হারিয়ে গেলেও, কাটোয়ার এই কয়েকজন মানুষ এখনও নিজেদের গ্রাম্য রীতি টিকিয়ে রেখেছেন। এই দৃশ্য দেখে অনেকেই মনে করছেন হয়তো এর মাধ্যমেই আবার নতুন প্রজন্মের কাছে ভাদু গানের চর্চা পৌঁছবে। আবারও গ্রামীণ সংস্কৃতির মাটির গন্ধে ভরে উঠবে বাংলার গ্রাম্য জনপদ।

advertisement

বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
Folk Culture: হারিয়ে যেতে বসা ভাদু গান শোনা গেল মঙ্গলকোটে, পুরনো ঐতিহ্য বজায় রেখেছেন কাটোয়ার এই গ্রামের মানুষ 
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল