এর আগে সড়কপথই পাচারকারীদের বেশি পছন্দ ছিল। পানাগড়, পালশিট, ডানকুনিতে প্রচুর পাচার হওয়া কচ্ছপ ধরা পড়ত এক সময়। নাকাচেকিংয়ের পরিমাণ বাড়ায় তাই এবার রাস্তা বদলে রেলপথ বেছে নিচ্ছে পাচারকারীরা। সূত্রের খবর, ভোরের ডাউন এক্সপ্রেস ট্রেনগুলি থেকে কচ্ছপ উদ্ধার এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, উত্তরপ্রদেশ থেকে সাধারণত ট্রেনগুলি ছাড়ে রাতে। শেষরাত বা ভোরের দিকে ঢোকে এ রাজ্যে। পাচারের জন্য এই রাতের অন্ধকারকেই বেছে নিচ্ছে পাচারকারীরা।
advertisement
আরও পড়ুন:বরফ সাদা শ্রীনগরে রাহুল-প্রিয়ঙ্কার স্নো-ফাইট! মুহূর্তে ভাইরাল ভিডিও
আগে সরাসরি হাওড়া স্টেশন হয়েই পাচার হতো কচ্ছপ। কিন্তু হাওড়ায় পুলিশি নজরদারি বেড়ে যাওয়ায়, আর ঝুঁকি নিচ্ছে না পাচারকারীরা। সেজন্য তারা বর্ধমান, মেমারি-সহ বিভিন্ন স্টেশনে সেইসব কচ্ছপ নামিয়ে দিচ্ছে। তারপর সেই কচ্ছপ সড়কপথে হাওড়া-সহ রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে পৌঁছচ্ছে। ব্যান্ডেল, মালদহ, নদিয়া হয়ে সীমান্ত পেরিয়ে পাচার হওয়া কচ্ছপ পৌঁচ্ছে যাচ্ছে বাংলাদেশে। আর বাংলাদেশ থেকে চিনের হংকং,মায়ানমার,থাইল্যান্ড এবং সিঙ্গাপুরে।
সংরক্ষিত প্রাণীর তালিকায় থাকা বহু কচ্ছপ এখনও বিক্রি হয় খাওয়ার জন্য। অনেকে বাড়িতে পোষার জন্যে বেআইনি ভাবে কচ্ছপ কেনে। এছাড়াও, কচ্ছপের হাড় দিয়ে ওষুধ তৈরি হয় বলেও গুজব রয়েছে। অনেকে আবার মনে করেন কচ্ছপের মাংসে রয়েছে যৌনশক্তিবর্ধক উপাদান। কিন্তু বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, এই সব রটনার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তিই নেই।
আরও পড়ুন:বরফ নিয়ে খুনসুটি রাহুল-প্রিয়ঙ্কার, 'ভারত জোড়ো যাত্রা'র শেষলগ্নের ছবি ভাইরাল
উত্তরপ্রদেশের গঙ্গার কচ্ছপ অর্থাৎ, সফট সেল গ্যাঞ্জেস টার্টেল মূলত মাংসের জন্য এ রাজ্য দিয়ে পাচার হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। তেমনই উত্তরপ্রদেশ থেকে ওলিভ ব্যাক লগার হেড টার্টেল, লিথারি টার্টেল, লগার হেড টার্টেল, মার্ক সফটশেল টার্টেল পাচার হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এছাড়াও, রয়েছে ইন্ডিয়ান ফ্লাপসেল টার্টেল। বিরল হওয়ায় এই কচ্ছপগুলি বন্যপ্রাণ সংরক্ষণের এক নম্বর তালিকাভুক্ত।
এরাজ্যে কচ্ছপের মাংসের কেজি প্রতি দাম ৩০০ টাকা দামে বিক্রি হয়। শীতকালে তা পৌঁছে যায় ৫০০ টাকায়। সীমান্তে এক বস্তা কচ্ছপের দাম পাঁচ থেকে দশ হাজার টাকা। সীমান্ত পার করতে পাঁচশো থেকে হাজার টাকা পর্যন্ত কমিশন দিতে হয় বলে জানা যায়া। কচ্ছপের ওজন যত বেশি তার দামও হয় তত বেশি।