শুক্রবার দুপুর থেকেই টানা চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। অভিযোগ এই জিজ্ঞাসাবাদেরই মাঝে বাড়ির দোতলার জানলা দিয়ে বাড়ির পিছনে থাকা পুকুরে নিজের দুটি মোবাইল ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছেন বিধায়ক। তারপর থেকে সেই মোবাইল উদ্ধার ঘিরেই তৈরি হয়েছে একেকটা নাটকীয় মোড়।
advertisement
প্রথমে বড়ঞার সাবলদহ অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি সাধন প্রামাণিকের নেতৃত্বে সাতজন সদস্য নিয়ে শুরু হয় পুকুরের জল ছেঁচার কাজ, যা শেষ হয় রবিবার ভোরবেলায়। সকাল ৭ টা ৩৮ মিনিটে উদ্ধার হয় জীবনকৃষ্ণের একটি মোবাইল ফোন। পরে বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে নিয়ে ঘটনার পুর্ননির্মাণও করানো হয়। তারপর শুরু হয় দ্বিতীয় মোবাইল খোঁজার জন্য তল্লাশি।
কিন্তু দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালানো হলেও বিফল হয় তল্লাশি অভিযান। কিছু শোল মাছ ছাড়া পুকুরের কাদা-পাঁক থেকে উদ্ধার হয়নি কিছুই। বেলা একটা বাজার পরে কাজ সম্পন্ন করে চলে যান কর্মীরা।
বড়ঞার সাবলদহ অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি সাধন প্রামাণিক বলেন, ‘‘সিবিআই আধিকারিকরা আমাকে সাহায্য করার জন্য বলেছিল। সেই কারণে দশ জন শ্রমিককে নিয়ে এসে পুকুরে নামিয়েছি মোবাইল খোঁজার জন্য। যদিও শেষ পর্যন্ত আমরা খুঁজে পাইনি।’’
এরই মধ্যে সিবিআই আধিকারিকরা ও বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে নিয়ে পুকুর পারে নিয়ে আসেন। ঘটনার পুর্ননির্মাণ করানো হয় একাধিকবার। দোতলার যেখান থেকে মোবাইলটি ছুঁড়ে ফেলা হয়েছিল সেখান থেকে ইট ছুঁড়ে পুকুরের মধ্যে ফেলা হয়। তারপর সেই জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়। সিবিআই আধিকারিকরা পুকুরের মধ্যে নির্দিষ্ট কিছু জায়গাও বলে দেন। সেই সমস্ত জায়গাতেই তল্লাশি চালানো হয়। তবে দ্বিতীয় মোবাইলটি উদ্ধার করা যায়নি।
দুপুর দুটো নাগাদ বন্ধ করে দেওয়া হয় তল্লাশি। এরপর সিবিআই আধিকারিকরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ঘণ্টা দুয়েক পরে পুকুরের মধ্যে জেসিবি নামানোর সিদ্ধান্ত নেন। পুকুরের পাঁক মাটিকে তুলে ফেলা হয়। তাতেও লাভ হয়নি।
জানা গিয়েছে, ২০১৮ সাল থেকে ২০২২ পর্যন্ত প্রচুর সম্পত্তি কিনেছেন জীবনকৃষ্ণ। কান্দিতে রয়েছে একটি রাইস মিল। রয়েছে ৪ বিঘে জমি। একাধিক জমি রয়েছে, যেগুলির টাকা দেওয়া হলেও রেজিস্ট্রি হয়নি। কান্দি হাই স্কুলের পিছনে রয়েছে বিধায়কের একটি পুকুর ও গ্যাসের গোডাউন।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত মুর্শিদাবাদের কৌশিক ঘোষের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন জীবনকৃষ্ণ। তাঁর বাড়ির আশেপাশে কম করে ৩৫ বিঘা জমি রয়েছে বিধায়কের। এছাড়া, বীরভূমেও একাধিক জায়গায় তার জমি ও সম্পত্তি রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জীবনকৃষ্ণের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ২ হাজারের উপরে শিক্ষক নিয়োগের প্রার্থী তালিকা ও টাকা লেনদেনের হদিস পেয়েছে সিবিআই।