চুঁচুড়া শহরের কেন্দ্রস্থলে চারমাথা মোড়ে রয়েছে “এডওয়ার্ডিয়ান ক্লক টাওয়ার”, যা ঘড়ির মোড় নামে পরিচিত। সাবেক ডাচদের শহর চুঁচুড়ার শতাব্দী প্রাচীন এই স্তম্ভঘড়িটি ব্রিটিশরা দখল নেওয়ার পর ইংল্যান্ডের রাজা সপ্তম এডওয়ার্ডের স্মৃতিতে স্থাপন করা হয়।
ইংল্যান্ড থেকে আনা হয় এই ঘড়ি। রাজা সপ্তম এডওয়ার্ড ছিলেন ব্রিটেনের রানী ভিক্টোরিয়ার জ্যেষ্ঠ পুত্র। যিনি রানী ভিক্টোরিয়ার মৃত্যুর পর ১৯০১ খৃষ্টাব্দের ৯ই আগস্ট ব্রিটেন ও ভারতবর্ষের শাসনকর্তা হিসাবে অভিষিক্ত হন। যদিও মাত্র ৯ বছর রাজত্ব করার পর ১৯১০ সালে নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে তাঁর জীবনাবসান ঘটে। তাঁরই স্মৃতিতে ১৯১৪ সালে এই সুসজ্জিত স্তম্ভঘড়িটি চুঁচুড়ার চার্চের সামনের চার মাথার মোড়ে প্রতিষ্ঠা করা হয়।
advertisement
আরও পড়ুন- মালদহে এবার ম্যাঙ্গো হাব? বড় পদক্ষেপ আম ব্যবসায়ীদের, সরাসরি চিঠি কেন্দ্রকে
স্তম্ভঘড়িটির চারদিকে রয়েছে চারটি ঘড়ি এবং উপরে রয়েছে একটি ধাতব ঘন্টা। এছাড়া স্তম্ভটির গায়ে একটু নীচে উত্তর মুখে রয়েছে রাজা সপ্তম এডওয়ার্ডের অবয়বের একটি ধাতব পার্শ্বমূর্তি এবং বাকি তিন দিকে রয়েছে তিনটি কারুকার্যখচিত স্মৃতিফলক। এই ঐতিহ্যবহনকারী স্মৃতিফল যা আজ হেরিটেজের মর্যাদা পাওয়ার পরও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পড়ে রয়েছে।
স্তম্ভ ঘড়িটি চারিদিকে যে চারটি আলোর স্তম্ভ রয়েছে, সেগুলি প্রায় দু বছর ধরে অন্ধকারের মধ্যে পড়ে রয়েছে। এ বিষয়ে চুঁচুড়াবাসী আক্ষেপের সুরেই বলেন, এটি শুধুমাত্র স্মৃতিফলক হয়ে রয়েছে। বারবার পিডব্লিউডি ইলেকট্রিক্যালকে আমরা জানানোর পরও কোনওরকম গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, আমরা আশাহত যে এমন এক স্মৃতিফলক এখানে থাকার পরও তার পর্যবেক্ষণ সঠিকভাবে হয়ে ওঠেনা। বড় বড় প্রশাসনিক ভবন বা প্রশাসনিক কর্তারা কিংবা রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন সময় আসার পরও এই স্মৃতিফলকে উপর কারুর দৃষ্টি যায়নি। অন্ধকারচ্ছন্ন ভাবেই পড়ে রয়েছে স্তম্ভের চারিদিকের আলোর বাতিগুলি।
ঘড়ির মোরে রাজনৈতিক দলের মিটিং মিছিল থেকে যেকোনো উৎসব অনুষ্ঠানে জমায়েত হয়। সারা বছর নানা অনুষ্ঠান লেগেই থাকে। হুগলি চুঁচুড়া পৌরসভার পৌর প্রধান অমিত রায় জানান, ঘড়ির মোড়ের ঘড়ি পুরসভার লোগোতে আছে। আমরা বারবার পূর্ত দপ্তরের ইলেকট্রিক্যালকে এ বিষয় নিয়ে অবগত করলেও আজও পর্যন্ত তা রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে না।
Rahi Haldar