পুণ্যার্থীরা একদিনের জন্য হোটেল চাইলেও সেটি দিতে হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে সেই নিয়ম মানা হচ্ছে না। প্রতি বছর ভাদ্র মাসের শুরুতেই আসে কৌশিকী অমাবস্যা তিথি। চলতি বছরে এই তিথি পালিত হবে ২২ অগস্ট। অমাবস্যা তিথি শুরু হবে ৫ ভাদ্র, শুক্রবার সকাল ১১টা ৫৫ মিনিটে। শেষ হবে ৬ ভাদ্র, শনিবার সকাল ১১টা ২৪ মিনিটে। এদিন তারাপীঠে মহা ধুমধাম করে দেবীর আরাধনা করা হয়।
advertisement
আরও পড়ুন : যেখানে বন্যা, সেখানেই আয় বেড়েছে কাঠমিস্ত্রীদের! কী এমন কাজ করছেন তাঁরা?
আর এই কৌশিকী অমাবস্যার সময় পুজো দিতে তারাপীঠে সমাগম হয় অসংখ্য পুণ্যার্থীর। তবে এবার সেই চেনা চেহারা কতটা দেখা যাবে, তাই নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। কারণ তারাপীঠের বিপুল সংখ্যক ভক্ত সমাগমকে কাজে লাগাতে চাইছেন সেখানকার হোটেল ব্যবসায়ীরা। আর এই উৎসবের আগেই আকাশ ছুঁয়েছে তারাপীঠের হোটেল ভাড়া। একদিনের জন্য মিলছে না হোটেলের ঘর। অন্তত তিনদিনের জন্য বুক করতে হচ্ছে হোটেল।
আর সেই বুকিংয়ের জন্য খসাতে হচ্ছে মোটা টাকা। তারাপীঠে প্রায় ৪০০ হোটেল রয়েছে। কিন্তু তার মধ্যে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। কোথাও নন এসি রুমের তিনদিনের ভাড়া ৬ হাজার, তো কোথাও আবার এসি রুমের ভাড়া পড়ছে ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা। খাতায় কলমে এই ভাড়ার কথা বলা হলেও, সময় এবং হোটেল ভেদে নন এসি রুমের ভাড়া পড়ছে প্রায় দ্বিগুণ থেকে তিন গুণ। যা দেখে মাথায় হাত পড়েছে পুণ্যার্থীদের। যদিও এই অতিরিক্ত ভাড়ার কথা অস্বীকার করেছে তারাপীঠ-রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদ এবং হোটেল অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃপক্ষ।
তারাপীঠ-রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় এ বিষয়ে জানান, হোটেল প্যাকেজ সিস্টেম উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কৌশিকী অমাবস্যায় অতিরিক্ত হোটেল ভাড়া রুখতে হোটেল অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিশেষ ‘হেল্প ডেক্স’ চালু করার জন্য। নির্দিষ্টভাবে কেউ অভিযোগ করলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
আরও পড়ুন : কৌশিকী অমাবস্যায় তারাপীঠ যাওয়ার প্ল্যান? হোটেলের ভিতর কী চলছে জানেন? যাওয়ার আগে সব জানুন, না হলেই ফাঁসবেন
উল্লেখ্য, কৌশিকী অমাবস্যার এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে পৌরাণিক ইতিহাস। কথিত আছে সাধক বামাক্ষ্যাপা, ১২৭৪ বঙ্গাব্দে কৌশিকী অমাবস্যায় তারাপীঠ মহাশ্মশানে শ্বেতশিমূল বৃক্ষের তলায় সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। ধ্যানমগ্ন বামাক্ষ্য়াপা এদিন তারা মায়ের দর্শন পান। অন্যদিকে পুরাণ অনুযায়ী শুম্ভ- নিশুম্ভের অত্যাচারে দেবতারা অস্থির হয়ে পড়েন। তখন দেবী মহামায়া নিজের ইচ্ছাশক্তিকে জাগ্রত করে নতুন এক দেবীমূর্তির জন্ম দেন। তিনি হলেন দেবী কৌশিকী। এই ভাদ্র মাসের অমাবস্যাতেই শুম্ভ-নিশুম্ভকে বধ করেছিলেন দেবী কৌশিকী। শোনা যায় এরপর থেকে এই অমাবস্যা কৌশিকী অমাবস্যা নামে পরিচিতি লাভ করে।