ছোটবেলা থেকেই রান্নাবান্নার প্রতি ছিল তাদের এক আলাদা টান। করোনা মহামারির সময় লকডাউনে ঘরবন্দি অবস্থায় সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা ধরনের কেক তৈরির ভিডিও দেখে অনুপ্রাণিত হয় তারা। সেখান থেকেই শুরু হয় তাদের রান্নাঘরে ছোট্ট এক স্বপ্নের বীজ বোনা।
advertisement
পড়াশোনার ফাঁকে, নিছক শখের বশেই শুরু হয় কেক বানানো। কিন্তু সেই শখই ধীরে ধীরে রূপ নেয় এক নতুন অধ্যায়ে। দু’জনের হাতে তৈরি হতে থাকে একের পর এক অভিনব ও সুস্বাদু কেক। দুবাই চকলেট কেক থেকে শুরু করে নবরত্ন কেক, ফ্রেশ লেচা, ভ্যানিলা স্পঞ্জ, রেড ভেলভেট বা ফিউশন কেক, এখন সবই পাওয়া যায় তাদের ঝুলিতে।
আরও পড়ুন: ভারতের ‘৫০০ টাকা’ কোন দেশে ‘১.৫ লাখ’ টাকার সমান বলুন দেখি…? চমকাবেন শুনলেই ‘নাম’!
প্রথমদিকে কেবলমাত্র পরিচিতজনদের জন্যই অর্ডার নিয়ে কেক তৈরি করত এই দুই বোন। কিন্তু ধীরে ধীরে তাদের তৈরি কেকের স্বাদ, গুণমান ও নান্দনিক ডিজাইন এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে যে, রঘুনাথপুর ছাড়িয়ে এখন তাদের নাম ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ছে গোটা পুরুলিয়া জেলায়।
আরও পড়ুন: ট্রেন থেকে নামছিল একে একে…, ‘কোথায় যাচ্ছ?’ জিজ্ঞেস করল GRP, উত্তর শুনতেই ছুটল ঘাম!
আজ তাদের ঘরোয়া কেকের ব্যবসা একটি শক্ত ভিতের উপর দাঁড়িয়ে আছে। রোজ নিয়ম করে অর্ডার আসে, কেউ জন্মদিনের কেক চায়, কেউবা বিয়েবাড়ির জন্য বিশেষ ডিজাইন। বাড়ি থেকেই বেশিরভাগ কেক বিক্রি হয়। তবে মাঝে মাঝে স্থানীয় মেলা বা হাটে ছোট্ট একটি স্টল নিয়েও বসেন তারা। সেই স্টল ঘিরে জমে ওঠে কেকপ্রেমীদের ভিড়। সবাই চায় এক টুকরো হলেও স্বাদ নিতে এই দুই বোনের হাতে গড়া কেকের।
এই যাত্রা শুধু দুই বোনের স্বাবলম্বী হয়ে ওঠার গল্প নয়, এটা অনেকের জন্যই অনুপ্রেরণার উদাহরণ। পরিবার ও সমাজের আশীর্বাদ, পরিশ্রম ও সততার মাধ্যমে কীভাবে এক সাধারণ উদ্যোগ অসাধারণ হয়ে উঠতে পারে, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন অনিন্দিতা ও সানিয়া। রঘুনাথপুরের গণ্ডি পেরিয়ে এখন তাঁদের স্বপ্ন পাখা মেলছে আরও বড় পরিসরে।
শান্তনু দাস