ট্রেন থেকে নামছিল একে একে..., 'কোথায় যাচ্ছ?' জিজ্ঞেস করল GRP, উত্তর শুনতেই ছুটল ঘাম!

ফের সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ভারতীয় রেলের একটি ব্যস্ত স্টেশনের চাঞ্চল্যকর ঘটনা। প্রতিটি স্টেশন চত্ত্বর থেকে ট্রেনের কামরাতে যাত্রী নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে ভারতীয় রেলের তরফে নেওয়া হয়েছে একাধিক পদক্ষেপ।

প্রতিটি স্টেশনে প্রহরায় থাকেন আরপিএফ ও জিআরপি জওয়ানরা। একইসঙ্গে কড়া নজরদারি চালান সশস্ত্র বাহিনী। আবার ট্রেনে বিনা টিকিটে যাত্রীদের দিকে নজরদারি রাখতেও থাকেন টিকিট পরীক্ষকরা।

কিন্তু এতসব নিরাপত্তা বিধি সত্ত্বেও এই রেলপথেই কিন্তু ঘটে থাকে একের পর এক ভয়াবহ ঘটনা। এমনই একটি ঘটনার স্বাক্ষী হল এবার উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজ জংশন স্টেশন।

উত্তর প্রদেশের প্রয়াগরাজ জংশন রেলস্টেশনে সম্প্রতি আচমকাই প্রবল উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ঠিক কী ঘটেছিল এই স্টেশনে? জানলে শিউরে উঠবেন।

আর পাঁচদিনের মতোই সীমাঞ্চল এক্সপ্রেস ট্রেন (১২৪৮৭) এসে থেমেছিল প্রয়াগরাজ স্টেশনে। যাত্রীদের ভিড়ের মধ্যেই হঠাৎ চোখ আটকে গেল একটি দরজায়।

ট্রেনের কামরা থেকে একে একে নেমে আসছিল অল্পবয়সি শিশুর দল। একসঙ্গে এতজন বাচ্চার ভিড় দেখে কর্তব্যরত জিআরপি জওয়ান এগিয়ে এলেন।

জিআরপি তাদের জিজ্ঞাসা করে, "তোমরা কারা? কোথায় যাচ্ছ তোমরা?" এরপরই যে সত্যি বেরিয়ে আসে তাতে জিআরপি, আরপিএফ এবং এএইচটিইউ দল মুহূর্তে হতবাক হয়ে যায়।

নেপথ্যে যে সত্যি বেরিয়ে আসে তা এককথায় ভয়ঙ্কর। তদন্তে উঠে আসে সীমাঞ্চল এক্সপ্রেস ট্রেনে মানব পাচারের একটা বড় চক্র চরম জঘন্য কাজ চালাচ্ছিল। আর সেই খবর পেয়েই পুলিশ পদক্ষেপ নেয়।

জিআরপি, আরপিএফ এবং এএইচটিইউর দল যৌথ অভিযান চালিয়ে ট্রেনের জেনারেল কোচ থেকে এক, দুই নয়, মোট ১৮ জন নাবালক শিশুকে উদ্ধার করে পুলিশ। ট্রেন থেকে নামানোর পর পুলিশ উদ্ধার করা শিশুদের চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেয়।

শুক্রবার আগেই খবর পেয়েছিল রেল পুলিশ। আর সেই গোপন তথ্য পেয়েই জানতে পেরেছিল সীমাঞ্চল এক্সপ্রেসের মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক শিশু পাচারের কাজ চলছে সকলের অলক্ষ্যে।

তথ্য পেয়েই জিআরপি, আরপিএফ এবং এএইচটিইউ-এর একটি যৌথ দল প্রয়াগরাজ জংশনে পৌঁছে তল্লাশি অভিযান শুরু করে। তদন্ত চলাকালীন, জেনারেল কোচ থেকে ১৮জন শিশুকে উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, এই সমস্ত শিশু বিহারের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা। শিশুদের প্রথমে ট্রেন থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় এবং তারপরে তাদের পরীক্ষা নিরীক্ষা করে চাইল্ড লাইনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। খুব শিগগিরই ওই উদ্ধারকৃত শিশুদের কাউন্সেলিং করবে টিম এবং জিজ্ঞাসাবাদের পরেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত ২ সেপ্টেম্বর পুলিশ সীমাঞ্চল এক্সপ্রেসে অভিযান চালিয়ে ১৫ জন শিশুকে উদ্ধার করে। সেই সময় শিশুদের শিক্ষার নামে কাজে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে উঠে এসেছে তদন্তে। এই ঘটনায় ৪ সেপ্টেম্বর জিআরপিও একটি মামলা দায়ের করে।

পুলিশের সন্দেহ, এই ঘটনাটিও শিশুশ্রম এবং মানব পাচারের সঙ্গে সম্পর্কিত। এই নিয়ে টানা তৃতীয়বার একই ট্রেনে শিশুদের পাচারের চেষ্টা ওই ট্রেনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।