কিন্তু মাধ্যমিক পাশ করার পর পারিবারিক চাপে তাঁকে হাত লাগাতে হয় ইলেকট্রিকের কাজে। বাবার ইচ্ছেতে কিছুদিন সেই কাজ করলেও মন পড়ে থাকত রং-তুলির জগতে। স্বপ্নের সঙ্গে কখনও আপস করেননি অনন্ত।
advertisement
নিজের দক্ষতা আর একাগ্রতায় তিনি ধীরে ধীরে তৈরি করতে শুরু করেন মূর্তি এবং ওয়াল পেন্টিং এর কাজ। ওয়াল পেন্টিং শেখার কোনও শিক্ষা না থাকলেও, নিজের চেষ্টাতেই রপ্ত করেছেন সেই শিল্প। বাবার পেশা রাজমিস্ত্রি হওয়ায় বিভিন্ন রংমিস্ত্রির মাধ্যমে তাঁর কাজ পৌঁছতে থাকে অনেক দূর পর্যন্ত। এই বিষয়ে অনন্ত বলেন, “ওয়াল পেন্টিং করা আমি কখনও কোথাও শিখিনি। তবে যেটুকু শিখেছি সেটা সোশ্যাল মিডিয়া থেকে। আগামী দিনে আরও ভাল জায়গায় কাজ করার ইচ্ছা রয়েছে।”
সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে আজ অনন্তর পরিচিতি ছড়িয়ে পড়েছে জেলার গণ্ডি ছাড়িয়ে কলকাতা, বীরভূম এমনকি দেশের বাইরেও। সম্প্রতি তাঁর তৈরি কিছু সিমেন্টের মূর্তি পৌঁছে গেছে নেপালেও। অনন্তর বাবা বিমল দাস বলেন, “ছেলেকে নিয়ে চিন্তা ছিল। তবে এখন ওর কাজ আমারও ভাল লাগে। আরও ভাল ভাল কাজ করুক এটাই চাই।”
একসময় যাঁকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতেন বাবা, আজ তিনি গর্বিত। অনন্ত প্রমাণ করেছেন যদি মন থেকে কিছু ভালবাসা যায়, তবে সেই ভালবাসাকেই জীবিকা এবং সাফল্যের পথে রূপান্তর করা যায়। ছোট্ট গ্রামের এক যুবক নিজের ইচ্ছাশক্তি, অধ্যবসায় ও শিল্পে পৌঁছে গেছেন বহু মানুষের হৃদয়ে। তাঁর এই যাত্রা শুধু শিল্পের নয়, আত্মবিশ্বাস ও সাহসেরও এক বাস্তব উদাহরণ।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী