এখানে নেই কাঠামো, খড়, মাটি, রং, গয়না। স্লেট পাথরে খোদাই করে একের পর এক দুর্গা গড়ছেন। একশোটি এমন মূর্তি করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছেন ঝাড়গ্রামের শিল্পী সুবীরকুমার বিশ্বাস। ঝাড়গ্রাম শহরের ঘোড়াধরা এলাকার বাসিন্দা সুবীর বিশ্বাস। তাঁর বাড়ির ছাদেই ‘ওয়ার্কশপ’। প্রথমে তিনি কাঠ, গাছের শিকড়, বাঁশ দিয়ে বিভিন্ন ভাস্কর্য ফুটিয়ে তুলতেন। পরে একদিন জুতো সেলাই করাতে গিয়ে দেখেন জুতো সেলাইয়ের অস্ত্র স্লেটের ওপর শান দেওয়া হচ্ছে।
advertisement
আরও পড়ুন : পুজোর আগে কলেজেই পাবেন ‘স্পেশাল কালেকশন’! ছাত্রীদের হাতের কাজ দেখে লোভ লাগবে
তারপর তিনি তাঁর অস্ত্র ধার দেওয়ার জন্য স্লেটের ব্যবহার করতে থাকেন। ব্যবহার করতে গিয়ে দেখেন ধার দেওয়ার পরে স্লেটের মধ্যে বিভিন্ন আকৃতি ফুটে উঠছে। তারপরেই শুরু হয়ে যায় স্লেট নিয়ে শিল্পীর চর্চা। তিলে তিলে নিজেকে স্লেটের ওপর দক্ষ করে তুলেছেন সুবীর। আর তাঁর সেই দক্ষতা বাস্তবের রূপ নেয় বিশাল আকৃতির দুর্গা গড়ার মধ্য দিয়ে।
আরও পড়ুন : দুর্গাপুজো মিস হবে না! পাহাড়ে ঘুরতে গিয়ে হবে দেবী দর্শন, বোনাসে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার সুযোগ
ছোটবেলায় সুবীর নিজে নিজেই শিখেছিলেন স্লেটের কাজ। তারপর তাঁর স্লেটে খোদাই করে ফুটে উঠেছে নানা মূর্তি ও ছবি। স্লেটের উপর আট ফুট লম্বা ও ছ’ফুট চওড়া দেবী দুর্গা বানিয়ে ইতিমধ্যে নজর কেড়েছেন সুবীর। দুর্গার পাশাপাশি লক্ষ্মী, গণেশ, কার্তিক, সরস্বতীও স্লেটে স্থান পেয়েছে। তিনি বলেন, মায়ের বোধন থেকে শুরু করে বিসর্জন পর্যন্ত মায়ের বিভিন্ন রূপ হয়। সে মতোই নানা রূপ ফুটিয়ে তুলেছি।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
স্বামী বিবেকানন্দের ১০০টির বেশি মুখাবয়ব তৈরি করেছিলেন। সলিল চৌধুরীর জন্মশতবর্ষের অনুষ্ঠানে জন্য ৩৫টি স্লেটের ওপরে ফুটিয়ে তোলেন সলিল চৌধুরীর মুখাবয়ব। এ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মুখাবয়ব তৈরি করেছিলেন। যা দেখে প্রধানমন্ত্রী খুশি হয়েছিলেন। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে সুবীরকে।
সুবীর বিশ্বাস বলেন, আমি মাতৃ শক্তির আরাধক। আমার পুঁথিগত বিদ্যা বেশি দূর নেই। তাই আমি শিল্পচর্চার ওপর নির্ভর করেই চলতে ভালবাসি। স্লেট খোদাই করে বিভিন্ন চিত্র ফুটিয়ে তোলার কাজ আমি নিজেই শিখেছি। প্রতিটি দুর্গা স্লেটে আঁকার পর খোদাই করতে ১০-১২ দিন সময় লাগে। দুর্গা নিয়ে ঝাড়গ্রাম ও কলকাতায় প্রদর্শনী করার ইচ্ছে রয়েছে।