গত কয়েক মাস ধরে বারংবার ধস ও সড়ক সমস্যার কারণে NH-10 ও ২৯ মাইল এলাকায় ভ্রমণ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। ফলে সিকিমমুখী পর্যটকের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছিল ব্যাপকভাবে। সেই প্রভাব পড়েছিল হোটেল ব্যবসায়ী, স্থানীয় দোকানদার থেকে শুরু করে গাড়িচালকদের ওপরও। এবার উত্তর সিকিমের দরজা খুলে যাওয়ায় তারা অনেকটাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন।
advertisement
তবে উত্তর সিকিম ভ্রমণে কিছু নতুন বিধি-নিষেধ জারি করা হয়েছে। গ্যাংটক থেকে যাত্রা করলে বেলা একটার মধ্যে সাংকালাং সেতু পার হতে হবে। লাচুং থেকে ফেরার পথে পর্যটকদের দুটোর মধ্যে টুং ব্রিজ অতিক্রম করা বাধ্যতামূলক। এক রাত-দু’দিনের পরিবর্তে এখন থেকে ন্যূনতম দুই রাত-তিন দিনের প্যাকেজ বুক করতে হবে, তাহলেই পারমিট মিলবে।
পর্যটন ব্যবসায়ীদের মতে, এই নিয়মই আসলে ব্যবসাকে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করবে। দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করলে পর্যটকেরাও আরও ভালভাবে জায়গাগুলি উপভোগ করতে পারবেন, আর ব্যবসায়ীদেরও আয় বাড়বে। হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, “দুই রাত তিন দিনের নিয়ম অত্যন্ত বাস্তবসম্মত। এতে পর্যটক সন্তুষ্ট হবেন, গাইডরা সম্পূর্ণ অভিজ্ঞতা দিতে পারবেন, আর ব্যবসারও উন্নতি হবে।”
এরই মধ্যে আরও এক সুখবর। ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ব পর্যটন দিবসের দিন খুলে দেওয়া হবে ডোকালাম সীমান্ত। এই জায়গাটিকে ‘রণভূমি পর্যটন’ হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা চলছে। ইতিমধ্যেই কয়েকটি বিশেষ দল প্রাথমিক সমীক্ষা করেছে। ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, ডোকালাম পর্যটন চালু হলে বাংলার পাশাপাশি দেশের অন্যান্য প্রান্ত থেকেও ভ্রমণকারীর ভিড় আরও বাড়বে।
পর্যটন ব্যবসায়ী দেবাশীষ চক্রবর্তী জানান, “লাচুং-ইয়ুমথাংয়ের মতো জনপ্রিয় জায়গার সঙ্গে যদি ডোকালামও পর্যটনের জন্য খুলে যায়, তাহলে উত্তর সিকিম এক নতুন পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠবে।”
উত্তর সিকিম ও ডোকালাম, দুটোই একসঙ্গে খুলে গেলে সিকিমের পর্যটন ব্যবসায় নতুন দিগন্তের সূচনা হতে চলেছে। পুজোর মরশুমে এই সিদ্ধান্ত সিকিমকে দেশের অন্যতম আকর্ষণীয় ভ্রমণকেন্দ্র করে তুলতে সক্ষম বলেই আশাবাদী পর্যটন মহল।