স্থানীয় সূত্রে জানা যায় বহু বছর আগে এলাকায় প্রবল বন্যায় ঘরবাড়ি, গরামথান বা গ্রাম রক্ষার দেবতা সমস্ত কিছু ভেসে গিয়েছিল। পাহাড়ের পার্শ্ববর্তী ঢেঙাম গ্রামের বাসিন্দারা সেই সময় পাশাপাশি অন্যান্য গ্রামবাসীদের সঙ্গে সভা করে গ্রাম রক্ষার দেবতাকে এই পাহাড়ে প্রতিষ্ঠিত করেন।
সেই সময় থেকেই এই পাহাড়ে ঢেঙাম গ্রামের মাহালি সম্প্রদায় এই পুজো করে আসছেন। ভিন জেলা থেকে আগত পর্যটক সাগেন মান্ডি বলেন ‘এটা প্রকৃতির পুজো, বিভিন্ন রাজ্য থেকে মানুষ আসেন পুজো দেখতে। দুই দিন ধরে অনুষ্ঠিত হয় মেলা।’
advertisement
প্রথম দিন হয় কানাইসর পাহাড়ে মেলা , অপর দিন পার্শ্ববর্তী ঝাড়খন্ড রাজ্যের বারাঘাটে বসে মেলা। চলে নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অম্বুবাচির পর থেকে বেলপাহাড়িতে শনিবার ধরে পাহাড়ের পুজো হয়। আষাঢ় মাসের দ্বিতীয় শনিবার গাড়রাসিনীর পাহাড়, আর তৃতীয় শনিবার কানাইসর পাহাড়ের পুজো হয়।
আরও পড়ুন: বাড়বে গতি, দাঁড়াতে হবে না সিগন্যালে! লক্ষ লক্ষ যাত্রীদের জন্য বিরাট পদক্ষেপ রেলের, জানুন
আর শ্রাবণ মাসের দ্বিতীয় শনিবার শিলদা, শেষ শনিবার হাতিমারায় পুজো হবে। নিয়ম করে প্রতিবছর এই প্রার্থনা করেন জঙ্গলমহলের বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দা রাকেশ দে জানান ‘প্রথম দিনের তুলনায় দ্বিতীয় দিনে একটু বেশি ভিড় হয়। জঙ্গলমহলের আদিবাসী মূলবাসী সম্প্রদায়ের মানুষেরা সারা রাত ধরে ধামসা মাদলের ছন্দে নৃত্য করেন।’ এই উৎসবকে কেন্দ্র করে আনন্দ উৎসবে মেতে উঠেন বাংলা বিহার, ঝাড়খন্ড, ওড়িশা সহ গোটা রাঢ বঙ্গ। পাহাড় পুজো এখন উৎসবে পরিণত হয়েছে।
আরও পড়ুন: জানালা ভেঙে খেল ধান! ক্লাবে ঢুকে তাণ্ডব, হামলা চালাল দাঁতাল ‘রামলাল’
পাহাড় পুজোয় কেবলমাত্র আদিবাসী মূলবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন নয়, বাইরে থেকে পর্যটকরাও এই উৎসবে সামিল হচ্ছেন। এখানকার অধিবাসীদের মতে আদিম যুগ থেকে মানুষ পাথর-বৃক্ষ এবং পাহাড়কে শক্তিরূপে পুজো করে আসছে। তাঁদের বিশ্বাস পাহাড় দেবতাকে তুষ্ট করতে পারলেই ভালো বৃষ্টি হবে। বৃষ্টি হলেই সুজলা সুফলা হয়ে উঠবে এই বসুন্ধরা।