তারপর ব্যাবসায়ী এবং বিভিন্ন শ্রেনীর মানুষের আগমনের ফলে বৃদ্ধি পায় এখানকার জনসংখ্যা। আজকের রামপুরহাট আজ থেকে প্রায় কয়েক বছর আগেও ছিল একদম অন্য ধরনের।রেলপথ নির্মাণের সময় কোম্পানির ঠিকাদার চার্লস হ্যামটন নামক এক দাপুটে ব্যক্তি রামপুহাটে আসেন। জানা যায় ১৮৫৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর রেল চলাচল শুরু হতেই রামপুরহাটে ব্যবসা বাণিজ্যের শ্রীবৃদ্ধি ঘটে মূলত মাড়গ্রাম আর নারায়ণপুরের ব্যবসায়ীরা সেখান থেকে রামপুরহাটে চলে আসার ফলে। চার্লস হ্যামটন সাহেবের তখন বিরাট দাপট। আইনগত স্বীকৃতি না থাকলেও তখন রামপুরহাটে তিনিই প্রশাসক তিনিই বিচারক এক কথায় তিনি ছিলেন শেষ কথা।
advertisement
আরও পড়ুন – NH10: গত তিন ধরে বন্ধ রয়েছে জাতীয় সড়ক, কখন খুলবে, চালু হবে যান চলাচল, রইল আপডেট
ঠিকাদার মানুষ হলেও তিনি ছিলেন সমাজসেবী এবং শিক্ষানুরাগী। তিনিই নিঃস্বার্থভাবে ১৮৮৬ খ্রীস্টাব্দে রামপুরহাটে একটি Middle English School প্রতিষ্ঠা করেন। এই স্কুলটিতে তখন ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত পড়ানো হত। সেই স্কুলটিই আজকের রামপুরহাট হাইস্কুল। রামপুরহাট উচ্চবিদ্যালয়ের ব্যাপারে হ্যামটন সাহেবের পরে যে মহান মানুষটির অবদান তিনি হলেন খানবাহাদুর সামসুজ্জোহা।সেকেড্ডার জমিদার এবং রামপুরহাটেরও জমিদার। এই সুশিক্ষিত মানুষটি ১৯২২ সালে রামপুরহাট হাইস্কুলকে ১৬ বিঘা জমি দান করেন। তারমধ্যে ৯ বিঘা জমি পরবর্তীতে রামপুরহাট কলেজকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ১৯২৩-২৪ সালে ব্যক্তিগত তত্বাবধানে রামপুরহাট উচ্চবিদ্যালয়ের মূল ভবনটি তিনিই তৈরি করেন।
আর এই স্কুলে একসময় শিক্ষা অর্জন করেছেন বাগ্মী অধ্যাপক তথা স্বাধীনতা সংগ্রামী জে এল ব্যানার্জী,নালান্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাতকড়ি মুখোপাধ্যায়, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক যতি সেনগুপ্ত,প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যক্ষ অমল মুখোপাধ্যায়,বিশ্বভারতীর অধ্যাপক কালীশঙ্কর মুখোপাধ্যায়,খড়্গপুর আই আই টির অধ্যাপক শান্তনু মজুমদার, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সিভিল ডিফেন্স সচিব শ্যামলাল ভকত,কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি নূরে আলম চৌধুরী, কবি সত্যসাধন চট্টোপাধ্যায়, ভারতীয় রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার সৌমেন রায়,রামপুরহাট কলেজে অধ্যক্ষ আবুল খায়ের প্রমূখ মহান মানুষেরা এই বিদ্যালয়ের ছাত্র। এছাড়াও রামপুরহাট বিধানসভার বিধায়ক তথা পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার ডক্টর আশীষ বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন এই স্কুলের ছাত্র।
Souvik Roy