বীরভূমের রামপুরহাট-সাঁইথিয়ার মাঝে অবস্থিত অতীতের ঐতিহ্যবাহী গ্রাম। এই গ্রামে মল্লেশ্বর নামে প্রাচীন ও প্রসিদ্ধ শিব মন্দিরটি অবস্থিত। এই মন্দিরকে কেন্দ্র করে আরও ২৩ টি শিব মন্দির গড়ে উঠেছে। তাই এই পল্লির নাম শিবগঞ্জ। রামপুরহাট থেকে বাসে চেপে এখানে সরাসরি আসা যায়। সাহেবগঞ্জ লুপ লাইনে মল্লারপুর স্টেশন অবস্থিত হলেও মন্দিরগুলি স্টেশন থেকে বেশ খানিকটা দূরে অবস্থিত। সুতরাং বাসে আসাই এখানে সুবিধাজনক হবে।
advertisement
আরও পড়ুন: যেকোনও সময় খুলে দেওয়া হতে পারে ফারাক্কা ব্যারেজের সব গেট! পদ্মায় যেতে বারণ
অতীতে মল্লারপুর যে কত সমৃদ্ধশালী ছিল আজও তার প্রমাণ পাওয়া যায় শিবগঞ্জের মন্দির-পল্লি দেখলে। এই মন্দির-পল্লি তৈরি হয় আনুমানিক দ্বাদশ থেকে ত্রয়োদশ শতকের মধ্যে। চতুর্দিকে প্রাচীর দিয়ে ঘেরা এক বিরাট চত্বরের মধ্যে মল্লেশ্বর শিব মন্দির অবস্থিত। বাকি মন্দিরগুলির বেশিরভাগই আকারে ছোট এবং চারচালা গঠন রীতিতে তৈরি। প্রধান তোরণটি দ্বিতল এবং উত্তর দিকে অবস্থিত। তোরণদ্বারের উপর নহবতখানা। পূর্ব দিকেও শিববাড়িতে প্রবেশের একটি পথ আছে। শিববাড়ির অভ্যন্তরস্থ মন্দিরগুলি নানা অলঙ্করণ, দেবদেবীর মূর্তি এবং কীর্তনের দৃশ্যাবলিতে সমৃদ্ধ। মল্লেশ্বর শিব মন্দিরের কাছে একটি মন্দিরে সিদ্ধেশ্বরী দেবীর একটি শিলামূর্তি প্রতিষ্ঠিত আছে।
আরও পড়ুন: হাতে পরার পর খাওয়াও যাবে! উদরপূর্তির রাখিতে মজল বাজার
সিঁদুরচর্চিত মুখমণ্ডলে উজ্জ্বল হয়ে আছে জাগ্রত ত্রিনয়ন। এই সিদ্ধেশ্বরী দেবীকে মল্লেশ্বর শিবের শক্তিস্বরূপা বলা হয়। মল্লেশ্বর শিব সম্পর্কে এই অঞ্চলে একাধিক জনশ্রুতি আছে। প্রাচীনকালে মল্লারপুর ছিল ঘোর অরণ্যসঙ্কুল এলাকা। মল্লনাথের নামানুসারে এই জায়গাটির নাম হয় মল্লারপুর।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
সিদ্ধিনাথ শিব সম্পর্কেও এই অঞ্চলে একাধিক জনশ্রুতি আছে। মল্লেশ্বর শিব মন্দিরের প্রধান উৎসব গাজন ও শিবরাত্রি। দুই উৎসবের সময়ই এখানে মেলা বসে। এর পাশাপাশি শ্রাবণ মাসের প্রত্যেকটি সোমবার এখানে প্রায় কয়েক হাজার ভক্তের সমাগম ঘটে। পঁচিশে চৈত্র থেকে চৈত্র সংক্রান্তির দিন পর্যন্ত মল্লেশ্বরে শিবের গাজন উৎসব হয়ে থাকে। এই উৎসব উপলক্ষ্যে বহু ভক্তের আগমন ঘটে এবং তাঁরা মল্লেশ্বর শিবের কাছে মানত করেন।
তবে আর দেরি কেন, এই ঐতিহ্যবাহী শিব মন্দির দর্শন দিয়ে এবারের শ্রাবণ মাসটা শেষ হোক।