এবার থেকে শ্রেণীকক্ষে থাকবেনা প্রথম বেঞ্চ, দ্বিতীয় ব্যাঞ্চ কিংবা তৃতীয় বেঞ্চ। সব ছাত্রছাত্রীদের সমান ভাবে গড়ে তোলার জন্য ক্লাস রুমের মধ্যে বেঞ্চকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে ইউ আকৃতিতে। যেখানে সব পড়ুয়ারাই বসতে পারবে সামনের বেঞ্চে। থাকবে না কোনও ব্যাকবেঞ্চার্স । এছাড়াও পড়ুয়াদের কোনও অভাব অভিযোগ থাকলে তারা জানাতে পারবেন অভিযোগ বাক্সে। এছাড়াও তাদের মনের কথা জানতে চাওয়ার জন্য স্কুলে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও পড়ুয়াদের কথা মাথায় রেখে লাইব্রেরি এমনকি সামান্য অর্থের বিনিময়ে তাদের বই খাতা বা অন্যান্য শিক্ষার সামগ্রী দিচ্ছে শিক্ষক শিক্ষিকারা। তার জন্য বিশেষ তাকের বন্দোবস্ত করা হয়েছে বিদ্যালয়ে।
advertisement
পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা ব্লকের রাধামোহনপুর হাটপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় শুধু একটি বিদ্যালয় নয়, শিশুদের এক মানবিক পাঠশালা। এই স্কুলের দেওয়ালজুড়ে শুধুই রং-তুলির ছোঁয়া নয়, রয়েছে জ্ঞানের বিস্তার। বর্ণপরিচয় থেকে ইংরেজির মাস-বার, মনীষীদের বাণী থেকে ছড়া— প্রতিটি চিত্র যেন একেকটি পঠনের পৃষ্ঠা। বারান্দার একপাশে গড়ে তোলা হয়েছে “লার্নিং কর্নার”, যেখানে গল্পের বই, খেলনার জগত আর স্বাধীন চর্চার সুযোগ, সব একসাথে মিলেমিশে গেছে।তবে এখানেই শেষ নয়।এই স্কুলে রয়েছে ‘সততার স্টোর’। দোকানে কেউ দাঁড়িয়ে নেই, নেই কোনও নজরদারি। দরকারি জিনিস নিজে তুলে নিতে পারবে পড়ুয়ারা, শুধু সঠিক মূল্যটি রেখে দিতে হবে নির্ধারিত বাক্সে। এখানেই বাচ্চারা বাস্তবের মধ্যে শিখছে সততা মানে কী।
আর এক কোণে রয়েছে ‘মানবতার দেওয়াল’। যার ঘরে বাড়তি আছে, সে এখানে রেখে যেতে পারে পোশাক বা দরকারি সামগ্রী। যাদের প্রয়োজন, তারা নিঃসংকোচে সেখান থেকে নিয়ে নিতে পারে প্রয়োজনীয় জিনিস। একে অপরের প্রতি সাহায্য এবং নিজেদের মধ্যে দায়িত্বশীল মানসিকতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে এই আয়োজন এই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। বিদ্যালয়ের এহেন মানসিকতায় খুশি সকলে।