এক সময় নুন, নীল ইছামতি নদীর তীরে ব্যবসার শুরু হয়েছিল, আজও সেখানে ব্যবসা চললেও বদলেছে ব্যবসার প্রধান উপাদান। বর্তমানে ভেড়ির মাছ, ভাটার ইট এখন প্রধান পণ্য বসিরহাটের। বসিরহাট শহরের পার্শ্ববর্তী এলাকাতে বর্তমান সময়ে শত শত ইটভাটা ও মাছের ভেড়ির দেখা মিললেও এই শহরে পুরনো আমলে অন্যতম প্রধান ব্যবসার মাধ্যম ছিল লবণ উৎপাদন।
advertisement
লবণের ব্যবসা থেকে পরিবর্তন হয়ে আজ যেখানে মেছো ভেড়ি ও ইটের ব্যবসায় পরিনত হয়েছে। যদিও এর ফলে আগের থেকে অনেক বেশি টাকার হস্তান্তর বেড়েছে। বেড়েছে জমির দাম, হচ্ছে নতুন নতুন ফ্ল্যাটবাড়ি।
স্বাধীনতার আগে প্রশাসনিক কাজের জায়গা ছিল ইছামতী নদীর তীরে বর্তমানে সোলাদানার বাগুন্ডি গ্রাম। লেখক বিশ্বজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “ইছামতি তীরে বসিরহাটের শহরের পাশে আজকের বাগুন্ডি গ্রামকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি লবণ ব্যবসার অন্যতম কেন্দ্র হিসাবে বেছে নিয়েছিল এবং সেখানে ‘সল্ট সুপারিন্টেন্ডেন্ট’ অফিস স্থাপন করে। ইছামতীর লবণাক্ত জল থেকে নুন তৈরি হত।”
লবণ তৈরির জন্য ইংরেজ আমলে বসিরহাটের বিভিন্ন গ্রামে ইছামতী নদীর ধারে নুনের গোলা তৈরি করা হয়। বসিরহাট শহরে ছিল নুনের বাণিজ্য কেন্দ্র। ১৮২২ সালে সেখানকার ‘নিমকি দেওয়ান’ হয়েছিলেন প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর। টাকির জমিদার মুন্সি কালীনাথ রায়চৌধুরী আতিথ্যে তাঁর থাকার ব্যবস্থা হত। নদিয়ার মাজদিয়া থেকে বেরিয়ে সুন্দরবনের রায়মঙ্গলে মিশেছে ইছামতী। তার ধার ঘেঁসে শুরু হয় হাট-বাজার।
যদিও প্রাচীনকালের বসিরহাট এলাকার পরিবর্তন হতে শুরু হয় ১৯৪৭ সালের স্বাধীনতার পর থেকে। তৎকালীন সময়ে সীমান্তের ওপার থেকে বহু মানুষ আশ্রয় নেন এ পারে। বসিরহাটের জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি গড়ে উঠতে লাগল ইট পাথরের ঘরবাড়ি। শহরের আশপাশে যে সব ধানিজমি ছিল, দ্রুত বিলুপ্ত হয়ে ইটভাটা, মেছোভেড়ির রমরমা শুরু হয়।
জুলফিকার মোল্যা