গত দু’ বছরে (২০২১-২২ সালে) রোপণ হয়েছে ১,৬৮,৮৪,৮৪৫টি চারাগাছ। ২০২২-২৩ সালে শালগাছের চারা রোপণ করা হয়েছে ১৪,৪০০টি। আকাশমণি এবং অন্যান্য গাছের চারার সংখ্যা ১,১২,৪৪৫টি। ২০২৩-২৪ সালের অর্থবর্ষে লাল চন্দনের ১৩,২০০টি চারাগাছ রোপণ করা হয়েছে। এই জেলার স্কুল ও কলেজগুলিতেও ‘একটি গাছ, একটি প্রাণ’ সরকারি স্লোগানে সাড়া ফেলেছে যথেষ্ট।
তবে এইসব পরিসংখ্যানের নেপথ্যে রয়েছে আরও একটি বড় সাফল্য। তা হল ৩৬,০২০ টি শ্রমদিবস তৈরি করা। এর ফলে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয়েছেন দরিদ্র আদিবাসীরা। নতুন বাগান সৃষ্টির জন্য মাটি উর্বর করা, বাড়তি জঙ্গল সাফাইয়ে এদের দক্ষতা পু্রোপুরি কাজে লাগানো এই শ্রমদিবসের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। নিট ফল, এদের আর্থ-সামাজিক মান অনেক উন্নত হয়েছে গত দশ বছরের তুলনায়।
advertisement
তালড্যাংরায় “চেঁচুড়িয়া ইকো-পার্ক” ও সাফল্যের আরও একটি উদাহরণ।। এক সময়ে তালডাংরা বনাঞ্চলের মধ্যে আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম দালানগোড়ায় বসবাস করত ৩৬টি পরিবার। দিনমজুরি ছাড়াও ৮৫ হেক্টর শালবাগানের পাতা ও কাঠের ওপরই তাঁরা পুরোপুরি নির্ভরশীল ছিলেন। কিন্তু দারিদ্র্য ঘুচত না। বনবিভাগ উদ্যোগী হয়ে ১৯৯৭ সালে ওখানে বিশাল জলাধার নির্মাণ করেন। সেটি ঘিরেই ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে এই ইকো-পার্কটি। কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি হয়। যার সুফল পেলেন ওই আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামবাসীরাই। ফলে তাঁদের আর্থিক সংস্থানেরও আমূল পরিবর্তন ঘটে। পর্যটকদের আনাগোনা বাড়তে থাকে। পরবর্তীতে গড়ে ওঠে পর্যটক আবাসও। বনবিভাগ ও দালানগোড়া বনসংরক্ষণ পরিচালিত এই ইকোপার্কটি সৌন্দর্য ও পরিচ্ছন্নতার জন্য ইতিমধ্যেই নজর কেড়েছে দেশের পরিবেশবিদদের কাছেও।
আরও পড়ুন : কয়েক মুঠো Dry Fruits ব্লাড প্রেশারের মহৌষধ! কোলেস্টেরল কমিয়ে রোগমুক্ত রাখে হার্ট
অন্যান্য জেলার সঙ্গে রাজ্য সরকারের ‘সবুজশ্রী’ প্রকল্পও সাড়া ফেলেছে বাঁকুড়া জেলায়। এই প্রকল্পে রাজ্যের প্রতিটি নবজাতক শিশুর পরিবারের সদস্যকে একটি করে বাণিজ্যিক ভাবে লাভজনক গাছের চারা উপহার দেওয়া হয়। মূল লক্ষ্য হল, প্রতিটি শিশুর আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং রাজ্যকে আরও দূষণমুক্ত করা। পরিসংখ্যান বলছে, প্রকল্পের শুরু অর্থাৎ ২০১৬ সাল থেকে। গত বছর পর্যন্ত সদ্যোজাত শিশুর পরিবারের সদস্যদের হাতে ৫৬,৮৮৬০৩টি গাছের চারা বিলি করা হয়েছে। দূষণমুক্ত বাংলার গড়ার লক্ষ্যে রাজ্য সরকারের এ এক অভিনব প্রয়াস।