নিজের শিল্প দক্ষতাকে কলেজ পাশের পর কাজে লাগিয়ে স্বনির্ভর হয়েছেন তিনি। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভগবানপুর ব্লকের বাবিয়া গ্রামের মৌমিতা মাইতি। পিছিয়ে পড়া গ্রামগুলির বেকার যুবক যুবতীদের কাছে দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন। মৌমিতা ছোটবেলা থেকেই আঁকতে ভালবাসত। কিন্তু ছোটবেলা থেকে পড়াশোনায় মেধাবী হওয়ায় পরিবার পড়াশোনাটাকেই বেশি প্রাধান্য দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: এক পায়ের দৌড়েই, অনেকের থেকে এগিয়ে অনামিকা!
advertisement
মৌমিতা বিএসসি নিয়ে কলেজ পাশ করেন। তারপর শিক্ষাকতা চাকরির জন্য বিএড কমপ্লিট করেন। কিন্তু সেসব করার পরও চাকরি জোগাড় করতে ব্যর্থ। তার একটাই কারণ দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে রয়েছে। তাই একসময় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন মৌমিতা। কিন্তু সে সব ভুলে নিজের ছোটবেলার শিল্পদক্ষ থাকে এই কাজে লাগিয়ে এখন রীতিমত ব্যবসা করছেন।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
মৌমিতার ছোটবেলার আঁকিবুঁকির হাতে বর্তমানে তুলির টানে ছবি জীবন্ত রূপ পায়। তাঁর স্বপ্ন রঙ তুলি হাতে ভাল শিল্পী হওয়া, সেই মত পড়াশোনার পাশাপাশি ছবি আঁকতে শুরু করেন মৌমিতা। ছোটবেলায় আঁকার প্রথাগত শিক্ষা না থাকলেও কলেজ পাশের পর আঁকার প্রশিক্ষণ নেন।
বর্তমানে তার হাতে তৈরি চুড়িদার, কুর্তি ছোটদের পোশাক, বড়দের পাঞ্জাবি, কুর্তা, ব্লাউজ, শাড়ি সহ বিভিন্ন কিছুতে ফুটিয়ে তুলছেন কল্কার কাজ। আর অনলাইনের মাধ্যমে সেসব রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রি করছেন মৌমিতা। শুধু তাই নয়, এর পাশাপাশি বাজার চলতি ক্লে দিয়ে তৈরি করছে হ্যান্ডমেড গহনা।
এ বিষয়ে মৌমিতা জানান, ‘ছোটবেলা থেকে আঁকার প্রতি ঝোঁক ছিল। কিন্তু সেভাবে প্রশিক্ষণ নেওয়া হয়ে ওঠেনি। তবে কলেজ পাশ করার পর প্রথাগত আঁকা শিক্ষার প্রশিক্ষণ নেন। তারপর শেষ চার বছর ধরে শুরু করেছেন হ্যান্ড আর্ট পোশাকের ব্যবসা। চুরিদার, পাঞ্জাবি, কুর্তি, কুর্তা, ছোটদের পোশাক সহ শাড়ি ও ব্লাউজে ফুটে কল্কার কাজ করা হয়। কাস্টমারদের পছন্দ অনুযায়ী বিভিন্ন পোশাকে কল্কার কাজ করা হয়। এর পাশাপাশি ক্লে দিয়ে হ্যান্ডমেড জুয়েলারি এসে গেছে বানিয়ে বিক্রি করছি। প্রতিমাসে গড়ে ১৫ থেকে ২০টা পোশাক তৈরি করা হয় অর্ডার। মাস গেলে হাতে থাকে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা’।
ছোটবেলার এই আঁকার শখ বর্তমানে মৌমিতাকে জীবনে চলার পথে অনুপ্রেরণা জুগিয়ে চলেছে। মৌমিতা পড়াশোনার ফাঁকে সময় ও সুযোগ পেলেই রং তুলি হাতে একা আপন মনে বসে পড়ে মৌমিতা, ছবি আঁকাই যেন তাঁর গভীর নেশা। তবে এই নেশাকে ভবিষ্যতে পেশা হিসেবেই বেছে নিয়েছে মৌমিতা মাইতি। আর তার এই কাজের মায়ের পাশাপাশি পরিবারের সবাই খুব সাপোর্ট করছে। এমনকি মৌমিতার মা জানান, তার মেয়ের মত যারা পড়াশোনা করে বাড়িতে বেকার বসে রয়েছে তাদের উচিত হাতের কাজের মাধ্যমে স্বনির্ভর হওয়া।
সৈকত শী





