কি বোর্ডে আঙুল ছুঁলেই ভেসে আসে অসাধারণ সব পরিচিত সুর। একের পর এক গান অনায়াসে তুলে ধরে সে। গানের তাল, লয় ও সুর তার কাছে যেন খুব সহজ। সংগীত শিল্পীরা গান ধরলেই সে সঙ্গে সঙ্গে সুর মিলিয়ে নেয়।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরার অয়না প্রধান এখন এলাকায় পরিচিত নাম। ছোট্ট বয়সেই সে হয়ে উঠেছে বহু অনুষ্ঠানের ভরসা। এগরা জ্ঞানদীপ বিদ্যাপীঠের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী অয়না। পড়াশোনার পাশাপাশি সংগীতই তার জীবনের বড় অংশ। ছোটবেলা থেকেই নাচতে খুব ভালবাসে সে। নাচের তালে তালে সুরের প্রতিও আগ্রহ জন্মায়। ধীরে ধীরে তবলা শেখে। তবলায়ও সে বেশ দক্ষ। তাল ধরে রাখতে তার আলাদা ক্ষমতা রয়েছে।
advertisement
সেই তালবোধই পরে কাজে আসে কি বোর্ডে। প্রায় এক বছর আগে শুরু হয় কিবোর্ড শেখা। অল্প সময়ের মধ্যেই সে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করে। প্রতিদিন নিয়ম করে রেওয়াজ করে অয়না। স্কুলের পড়াশোনা সামলে সে সময় বের করে। পরিবারের পূর্ণ সমর্থন তাকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছে।
এখন এলাকায় কোনও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মানেই অয়নার ডাক পড়ে। স্কুল অনুষ্ঠান, পাড়ার অনুষ্ঠান, মেলা বা সভা—সব জায়গাতেই তার ডাক। শুধু স্থানীয় অনুষ্ঠান নয়। বড় বড় ব্যান্ডগুলিও সবার আগে তাকেই ডাকে। অভিজ্ঞ শিল্পীদের সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করে নেয় সে। ক্ষুদে শিল্পী হলেও তার সুরে হার মানেন অনেকেই। কি বোর্ডে আঙুল পড়লেই দর্শক আসন থেকে ভেসে আসে করতালি। তার বাজনায় গান যেন আরও প্রাণ পায়। বয়স অল্প হলেও এই গুরু দায়িত্বে মঞ্চে সে একেবারেই নার্ভাস হয় না। আত্মবিশ্বাসেই তার বড় শক্তি।
এত কম বয়সে এমন সাফল্যে খুশি তার পরিবার। বাবা-মা গর্ব অনুভব করেন। প্রতিবেশীরাও তাকে নিয়ে আনন্দিত। এলাকাবাসীর মুখে মুখে তার প্রশংসা। অনেকেই তাকে ভবিষ্যতের বড় শিল্পী হিসেবে দেখছেন। অয়নার স্বপ্ন আরও বড় হওয়ার। সে আরও ভাল করে শিখতে চায়। কিবোর্ডের পাশাপাশি অন্যান্য বাদ্যযন্ত্রেও নিজেকে দক্ষ করতে চায়।
আরও পড়ুন- পণের জন্য গৃহবধূর মর্মান্তিক পরিণতি! আদালতের সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ পরিবারের
পড়াশোনা ও সঙ্গীত দুটোতেই সে সমান গুরুত্ব দেয়। তার এই অদম্য ইচ্ছাশক্তি সকলের অনুপ্রেরণা। অল্প বয়সে বড় দায়িত্ব নিয়ে সে এগিয়ে চলেছে। সুরের পথেই নিজের স্বপ্ন বুনছে এগরার অয়না প্রধান।





