‘‘আমাদের দরকার শুধু গাছ দেখা
গাছ দেখে যাওয়া’’
এই কবিতার লাইগুলিকেই সার্থক করেই যেন গড়ে উঠেছে শ্যামনগরের এলাকার “গাছবাড়ি”। যে বাসযোগ্য ভিটেতে তারা বসবাস করেন সেখানেই নিজেদের সঙ্গেই লালন পালন করেন প্রায় হাজার দশেক গাছ। বর্তমানে দৈনন্দিন জীবনে নিজের বাড়ির বারান্দা বাগান কিংবা ছাদ বাগানের চিত্র আমাদের চোখে সমসাময়িক।
advertisement
কিন্তু এমন বসত ভিটেই যে, গাছ পালনের আঁতুরঘর, তা শ্যামনগরের এই গাছবাড়ি তার অন্যতম নিদর্শন। মূলত এই এক টুকরো অক্সিজেনের পৃথিবী নিজে হাতে লালন পালনে রেখেছেন বাড়ির কর্ত্রী দিপালী দেবী পাশাপাশি নিজের হাতেই মাটি ও তৈরি করেন তিনি। বর্তমানের কংক্রিটের জগতে এক টুকরো মাটির খোঁজ যেন আকাশে চাঁদ পাওয়ার সমান।
সবকিছুকে উপেক্ষা করেই নিজের বাড়িতেই কখন বা ফেলে দেওয়া ছেঁড়া জামা কাপড়, তো কখনও শাকসবজির জল, কিংবা ভিন্ন আনাজপত্র, আবার কখনও ডাব কেটে গুঁড়ো করে, কাগজের সঙ্গে তা বস্তা বোঝাই করে পচিয়েই উপকরণে তৈরি করেন একদলা মাটি।। যা দিয়ে রীতিমতো গাছের খাদ্যের যোগানও দেন তিনি।
আরও পড়ুন: ‘প্যাকেজের পাওয়ার হাউস’ এই কলেজ! এখান থেকে পড়াশোনা করলেই ‘কোটিপতি’ হওয়া যাবে? চাকরির সেরা সুযোগ
তার জীবনের মেয়েবেলা কেটেছে মাটি ঘেঁটে, বাবার সঙ্গে মাত্র চার মাস বয়স থেকে তার মাটির হাতে খড়ি। মাটির যারা বন্ধু সেই শিকড় যেন তার রন্ধ্রে রন্ধ্রে ।। বর্তমানে উন্নত প্রযুক্তির এই যুগেও মাটির গন্ধ যে কারোর প্রাণ হতে পারে তার একমাত্র উদাহরণ দিপালী দেবী নিজেই।। ইতিমধ্যেই চলছে বর্ষাকাল, এই বর্ষার জল ধরে রেখেও গাছের খাদ্যের জোগান দেন দুই স্বামী-স্ত্রী মিলে। গাছের পাশাপাশি মাটি ও দিপালী দেবীর আরেক বন্ধু।
তার বসত ভিটেতে থাকা এই হাজার দশেক গাছ তার মনের একাকীত্ব কাটানোর পাশাপাশি অন্যতম নেশা এমনটাই জানালেন তিনি।। তবে এই নেশাকে আগামী দিনে পেশা করতেও তার কোনো ক্ষতি নেই।। বিভিন্ন মানুষ আসেন এই রংবাহারি নানান ধরনের গাছ দেখতে। গাছকে ভালবেসেই সাধারণ মানুষকেও গাছ উপহার দেন তারা। তবে এই গাছ আর মাটির মেলবন্ধনে তাদের বসত ভিটেই যেন এক আকাশ সমান অক্সিজেনের ঘাঁটি।
শুভজিৎ সরকার