সৌমেশ মন্ডল বুঝেছিলেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের সন্তানেরা শিক্ষার মূল স্রোত থেকে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন। পরিবারের সঙ্গে তারা বারবার স্থানান্তরিত হয়। যেকারণে নিয়মিত বিদ্যালয়ে যাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয় তারা। ঠিক সেই কারণেই তিনি উদ্যোগ নেন যেখানে শিশুরা থাকে, সেখানেই পৌঁছে দেবেন শিক্ষার আলো। এই প্রসঙ্গে সৌমেশ বাবু বলেন, এই পথ দিয়েই আমাকে বিদ্যালয়ে যেতে হয়। একদিন এই বাচ্চার আমার নজরে আসে। তারপর অনেক ভেবে ঠিক করি ওদের শিক্ষাদান করার কথা। সেই থেকেই চলছে। আমার ছাত্র ছাত্রীরা এবং কিছু এনজিও আমাকে সাহায্য করে। ভাটার তরফ থেকেও সাহায্য পাই।
advertisement
আরও পড়ুন: পাওয়া যাবে না সামুদ্রিক মাছ! কারণ জানলে অবাক হবেন
পূর্বস্থলীর রাজ ইটভাটা সহ আরও বিভিন্ন ভাটায় তিনি নিজের চেষ্টায় এবং কিছু এনজিও-র সহযোগিতায় তৈরি করেছেন ছোট্ট শিক্ষাকেন্দ্র। সেখানে শুধুমাত্র পড়াশোনা নয়, শিশুদের জন্য টিফিনের ব্যবস্থাও করেন তিনি। অনেক সময় এনজিওদের সহযোগিতা না পেলেও সৌমেশ বাবু নিজের উদ্যোগেই এই মহান কর্মকাণ্ড চালিয়ে যান। তাঁর কথায়, \”ওদের চোখে যখন অক্ষর চিনতে শেখার আনন্দ দেখি, তখনই মনে হয় এই পরিশ্রম সার্থক।\” সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয়, সৌমেশ বাবুর এই প্রচেষ্টায় তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছে তাঁরই ছাত্রছাত্রীরা।
আরও পড়ুন: শুরু ফিশিং ব্যান পিরিওড! বন্ধ মাছ ধরা! এই সময় কী করেন মৎস্যজীবীরা জানুন
কেউ বইপত্র এনে দেয়, কেউ টিফিনে সাহায্য করে, কেউ আবার ছোট ছোট শিক্ষণীয় গল্প বলে শিশুদের মন জয় করে। বর্ধমানের এই শিক্ষক এবং তার ছাত্রছাত্রীদের এই যৌথ প্রয়াস যেন মানবিকতার এক অন্যতম উদাহরণ হয়ে উঠেছে। ভবিষ্যতে সৌমেশ মন্ডলের ইচ্ছা, আশেপাশের আরও কয়েকটি ইটভাটাতেও এই শিশুদের শিক্ষার সুযোগ করে দেওয়া। নিঃস্বার্থ ভাবে চালিয়ে যাওয়া শিক্ষকের এই উদ্যোগ সত্যিই এক অন্যতম দৃষ্টান্ত।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী