বৌমার নামে মঞ্জুর হওয়া বিধবা ভাতা লক্ষীর ভান্ডার ভেবে এতদিন খরচ হয়েছে সংসারে। বিডিওর চাপে সে টাকা একসঙ্গে দেওয়ার সামর্থ্য নেই , একদিকে বেনিফিশিয়ারি হিসাবে দোষী সাব্যস্ত করে ব্যাংকের বই আধার কার্ড রেখে দিয়েছে বিডিও, এক সঙ্গে ফেরত চাইছে ২৪ মাসের ২৪ হাজার টাকা, অন্যদিকে সমাজে কলঙ্কিত!
আরও পড়ুন- বহুদিন শারীরিক সম্পর্কে নেই? বিকল হতে পারে আপনার ‘হার্ট’…! শরীরে কী হচ্ছে জেনে নিন
advertisement
আরও পড়ুন- বোঁচা না চোখা? নাকই বলে দেবে কে কেমন ‘মানুষ’…! মিলিয়ে দেখে নিন যারটা জানতে চান
তাজ্জব হওয়া ঘটনাটি নদিয়ার শান্তিপুর শহরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের বিশ্বসুখ পল্লীতে। সেখানে পরেশ দে ছোট্ট একটি দোকান চালান বাড়ির সামনে, স্ত্রী শেফালী দেবীর দাবী প্রায় দু বছর আগে বেশ কয়েকবার লক্ষীর ভান্ডারে আবেদন করেও যখন মঞ্জুর হয়নি তখন প্রতিবেশী তৃণমূলের তৎকালীন বুথ সভাপতি উত্তম হালদার তার কাছ থেকে কাগজপত্র সহ ১০০০ টাকা নিয়ে কিছুদিনের মধ্যেই জানায় লক্ষীর ভান্ডার মঞ্জুর হয়ে গেছে ব্যাংকে গিয়ে দেখে নেওয়ার জন্য।
আরও পড়ুন- পুরুষরা বার্ধক্যকে ‘বাই’ বলুন, এটা ৭ দিন খেলেই শিরায় শিরায় টগবগ করবে যৌবন! এবার খেল শুরু!
স্থানীয় ব্যাংকের কিয়ক্সে , অ্যাকাউন্ট করা হলেও পাসবুক দেওয়া হয়নি তবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন এক হাজার টাকা ঢুকেছে একাউন্টে। এরপর সেই বুথ সভাপতি আরও ২০০০ টাকা নেয় পূর্ব শর্ত অনুযায়ী। এভাবেই মাসের পর মাস টাকা জমা দিলে কিয়ক্স ব্যাংক একটা স্লিপ দেয়, অন্যদিকে টাকা তুললেও মেলে স্লিপ! কিন্তু পাসবুক সাপ্লাই নেই বলে জানানো হয়।
আরও পড়ুন- ঘিলুতে ঘা! মাথায় কৃমি উঠে যন্ত্রণা, বমি…! কোন ৬ সবজিতে লুকিয়ে থাকে মৃত্যুর বীজ?
সম্প্রতি কয়েকদিন আগে হঠাৎ শান্তিপুর থানার পুলিশ বাড়িতে এসে পৌঁছায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ধরে নিয়ে যায় শাশুড়ি পদ্ম দে এবং বৌমা শেফালী দে দুজনকেই। সেখানে স্পষ্ট হয় বিষয়টি। পুলিশের নির্দেশে মূলত মূল শাখা অফিস শান্তিপুর স্টেট ব্যাংক থেকে তারা পাসবুক নিয়ে বিগত দু’বছরের স্টেটমেন্ট তুলে দেখে তাদের একাউন্টে ঢুকেছে বিধবা ভাতা। এরপর থানার বড়বাবু পাঠায় বিডিওর কাছে। বিডিও তাদের পাসবুক এবং আধার কার্ড আটকে রেখে দাবি করে সরকারি প্রদেয় ২৪ মাসের ২৪ হাজার টাকা ফেরতের। বর্তমানে দুশ্চিন্তায় পরিবার।
শাশুড়ি পদ্ম দে জানান, এতদিন না জেনে নিজের একমাত্র জলজ্যান্ত সন্তানের জন্য সরকারি ভাতা হিসেবে বৌমার প্রাপ্য অর্থ দিয়ে চলেছে সংসার, তবে জেনে আর খেতে পারব না সেই টাকা, কিন্তু যে স্থানীয় নেতা সেই টাকা নিয়ে এত বড় সর্বনাশ করে দিল, তাকে বাড়ি পাচ্ছি না, শান্তিপুর থানায় নিশ্চয়ই লিখিত অভিযোগ জানাবো তার নামে। বিডিওর কাছে তিনি অনুরোধ জানিয়েছেন, বিধবা ভাতার পরিবর্তে পুরনো মঞ্জুর হওয়া বিধবা ভাতার তারিখ অনুযায়ী লক্ষ্মীর ভান্ডার মঞ্জুর করে দিলেই বিষয়টি আপাতত নিষ্পত্তি হয়। কিন্তু সরকারি সূত্রে জানা গেছে এক খাতের টাকা অন্য খাতে দেওয়া যায় না।
অন্যদিকে ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর উৎপল সাহা ওই অভিযুক্ত নেতার দুর্নীতি স্বীকার করলেও তিনি বলেন, বড় কোনও পদে সে ছিল না সবচেয়ে বড় কথা সরকারি আধিকারিকরা রয়েছে আমি জনপ্রতিনিধি রয়েছি, তাদেরকে বাদ দিয়ে কাউকে টাকা দেওয়া উচিত হয়নি, তবে তিনিও আশ্চর্য হয়েছেন সরকারি প্রক্রিয়ায় কিভাবে স্বামী বেঁচে থাকা অবস্থায় স্ত্রী বিধবা ভাতা পেলো তা নিয়ে। তবে তিনি এও মানছেন শহরের একেবারে শেষ প্রান্তে হরিপুর পঞ্চায়েত সংলগ্ন এলাকায় আজ থেকে প্রায় দু বছর আগে একটি কুচক্র কাজ করতো অনেকেই শহরে বসবাস করে গ্রামে পঞ্চায়েত থেকে ভাতা করানো হতো বলে শোনা গিয়েছিল।
তবে প্রশ্ন উঠেছে ভুল কার? দিনের পর দিন বেনিফিশিয়ারি টাকা তুলেছে অথচ জানেনা, তার? নাকি অর্থের বিনিময়ে যে অভিযুক্ত নেতা বিভিন্ন দুর্নীতি করে ফেরার হয়েছে তার? তবে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন যেখানে এত পরিকল্পনা অনুসন্ধান স্কুটিনির পর আবেদন সরকারিভাবে মঞ্জুর হয় সেখানে ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়াই কি অনুমোদন হয়েছিলো বিধবা ভাতা? তাহলে এই দায় কার?
মৈনাক দেবনাথ