ত্রিবেণী থেকে সামান্য দূরত্বে, এই সরস্বতী-তীরেই গড়ে উঠেছিল বাংলার অন্যতম আন্তর্জাতিক বন্দর সপ্তগ্রাম। ষোড়শ শতকে ত্রিবেণী থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে সপ্তগ্রাম হয়ে বয়ে চলত সরস্বতী নদী। কিন্তু, তারপর থেকেই সরস্বতী নদীর উৎপত্তিস্থলে পলি জমতে শুরু করে। আর ধীরে ধীরে তা শুকিয়ে যায়। সেই সরস্বতী নদী বর্তমানে নিতান্তই একটি খালে পরিণত হয়েছে। তার চারিদিকে শুধুই দূষণ। তার মজে যাওয়া শাখা আন্দুল কলেজের পাশ দিয়ে এখনও রয়েছে, কিন্তু তাও কিছু দূর গিয়ে শেষ হয়ে গিয়েছে জনবসতির চাপে। অভিযোগ কোথাও আবার মাছের ভেড়ি তৈরি হয়েছে। কোথাও আবার গজিয়ে উঠেছে ইটভাটা।
advertisement
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
একসময় বড় বড় বাণিজ্যিক নৌকো যাতায়াত করত অনায়াসে এই নদীতে। প্রায় ৭০-৮০ কিলোমিটার নদীপথ সর্বত্রই একই দৃশ্য, ক্রমশ নদী সংকীর্ণ হয়ে যাওয়ার ছবি। নদী রক্ষা করতে হাওড়ার বহু মানুষ একজট হয়ে, নব্বই দশকের শেষদিকে হাওড়া সরস্বতী নদী বাঁচাও কমিটি গঠিত হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, “ঐতিহ্যের এই সরস্বতী নদীকে গ্রাস করেছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। যার ফলে নদী ক্রমশ ছোট হতে হতে নালায় পরিণত হয়েছে। হাওড়া শহরের নিকাশি ব্যবস্থা অনেকটাই নির্ভর করত এই প্রাচীন নদীর উপর। ধীরে ধীরে নদী দখল হয়ে যাওয়ায় শহরের জল নিকাশির ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা দিচ্ছে।”
আরও পড়ুন: পুকুরের মাছ বাঁচাতে গিয়ে ছুটে আসছে নতুন বিপদ! ভারসাম্য ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়ছে পরিবেশ
একদিকে নদীর উপর আবর্জনা এবং অবৈধ নির্মাণ নদী ক্রমশ সংকীর্ণ হয়ে পড়ছে। বর্তমানে নালায় পরিণত হচ্ছে নদী, দেখলে বোঝার উপায় নেই এককালে এটা যে নদী ছিল। যারা কমিটিতে থেকে আন্দোলন শুরু করেছিল তাদের মধ্যে এখন অনেকেই বেচেঁ নেই। ফলে হাওড়া সরস্বতী নদী বাঁচাও কমিটির আন্দোলন বা কর্মসূচি শিথিল হয়ে পড়েছে। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, এই ঐতিহ্যবাহী নদীর বুকে অবাধে পড়ছে নোংরা আবর্জনা মজে যাচ্ছে সরস্বতী নদী। লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা খরচ হলেও প্রকৃত সংস্কার হয়নি বলেই দাবি মানুষের।
রাকেশ মাইতি





