সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাড়ির ছাদে ঘুড়ি লাটাই নিয়ে মেতে থাকলেন বর্ধমান শহরের বাসিন্দারা। দিনভর চলল ঘুড়ির কাটাকুটি খেলা। থেকে থেকে আওয়াজ উঠল ভোকাট্টা। ঘুড়ি ওড়ানোর এই রীতি এই শহরে ঘুড়ির মেলা নামে পরিচিত।
আরও পড়ুন- Didir doot: 'অন স্পট' সমস্যা সমাধান করলেন 'দিদির দূত'! কে তিনি?
রাজ্যের অন্যান্য অনেক জায়গায় বিশ্বকর্মা পুজোয় ঘুড়ি ওড়ানো হয়। কিন্তু বর্ধমান শহর ঘুড়ির মেলায় মেতে ওঠে এই মকর সংক্রান্তিতে। রাজ আমল থেকে বর্ধমান শহরে এই প্রথা চলে আসছে।
advertisement
বর্ধমানের মহারাজ মহাতাব চাঁদের ছিল ঘুড়ি ওড়ানোর শখ। দেশ-বিদেশ থেকে নানা রঙের, নানা আকারের ঘুড়ি আনাতেন মহাতাব চাঁদ। কারিগরদের নিয়ে এসে ঘুড়ি তৈরি করানো হতো রাজবাড়িতে।
পৌষ সংক্রান্তির সকাল থেকে রাজবাড়ির ছাদে সপারিষদ ঘুড়ি ওড়ানোর আনন্দে মেতে উঠতেন বর্ধমানের মহারাজা মহাতাব চাঁদ। বন্ধু রাজা জমিদারদের আমন্ত্রণ জানানো হত। সারাদিন ধরে চলত খানাপিনার সঙ্গে ঘুড়ি ওড়ানো। রাজা বা সেই রাজ আমল না থাক রয়েছে রাজবাড়ি। ঘুড়ি ওড়ানোর সেই প্রথা আজও পুরোমাত্রায় বজায় রয়েছে বর্ধমান শহরে।
রাজ আমলে পৌষ সংক্রান্তির আগে থেকেই সাজ সাজ পড়ে যেত রাজবাড়িতে। কাচ গুঁড়িয়ে, আঠা তৈরি করে মাঞ্জা সুতো তৈরি হতো। সেই সুতো গুটানো থাকতো বাহারি লাটাইয়ে। দেশ-বিদেশ থেকে ঘুড়ি তো আসতেই, ডাক পেতেন সেরা কারিগররাও।
বাঁশের ছিলা, কাগজ, আঠা দিয়ে তৈরি হতো বাহারি সব ঘুড়ি। রাজা প্রথমে পৌষ সংক্রান্তির সকালে সাদা পায়রা ওড়াতেন। তারপর শুরু হতো ঘুড়ি ওড়ানোর পালা। সেই আনন্দ অনুষ্ঠানে অংশ নিতেন রাজবাড়ির মহিলারাও।
আরও পড়ুন- Nadia: নদিয়ায় বামেদের জয়, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সমবায় সমিতির দখল নিল সিপিআইএম
রাজার শুরু করা সেই প্রথা আজও পুরোমাত্রায় বজায় রয়েছে বর্ধমান শহরে। সকাল থেকে বর্ধমানের বাসিন্দারা ছাদে উঠে ঘুড়ি ওড়ানোয় মেতে থাকেন। এদিন বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে দিনভর চলল রান্নাবান্না, পিকনিক। থেকে থেকে আওয়াজ উঠল ভোকাট্টা।