এই মন্দিরের পাশেই একটি পঞ্চমুন্ডা আসনে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন রানি ভবানীর কোনও এক আত্মীয়। তারপর থেকেই এই গ্রামের নাম হয় সিদ্ধিকালী এবং মা সিদ্ধেশ্বরী মা কালী নামেই পুজিত হন এই গ্রামে। এই সময় রানি ভবানী মা কালীর পুজো চালানোর জন্য প্রায় ৫২ বিঘা সম্পত্তি দেবত্ব সম্পত্তি হিসেবে রাখেন। পাশাপাশি পুরোহিত থেকে শুরু করে একটি পুজো চালাতেন। যে সকল মানুষজনের প্রয়োজন হয় তাদের জন্যও বরাদ্দ করা হয় জমি। এই মন্দিরে মায়ের প্রত্যেকদিন অন্নর ভোগ ও দেওয়া হয়।
advertisement
এলাকা জুড়ে ঘন জঙ্গলের মধ্যে মায়ের মন্দির। চারিদিক বৃত্ত আকারে জলবেষ্টিত মাঝখানে মায়ের একটি পুকুর এবং মন্দির অবস্থিত। দিনের আলোতে পুজো করতে আসেন সবাই কিন্তু সন্ধে নেমে এলে এই এলাকায় বিশেষ দিন ছাড়া আর কেউ প্রবেশ করেন না। এখনও পর্যন্ত এই এলাকায় সন্ধ্যার পরে মানুষ যাওয়ার চেষ্টা করলে বিভিন্নভাবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এমন কথিত আছে।
আরও পড়ুন: Chandra Brihaspati Gajakesari Rajyog 2025: গজকেশরী রাজযোগ! চন্দ্র-বৃহস্পতির মহামিলন, ৩ রাশি ফুটপাত থেকে রাজপ্রাসাদে
বিগত দিনে টিনের ভেলাতে অথবা নৌকোয় করে মায়ের মন্দিরে পৌঁছে পুজোর জোগাড় করতে হত। কিন্তু এই মুহূর্তে জল বেষ্টনীর ওপরে একটি সরকারি উদ্যোগে ছোট্ট ব্রিজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই পথ দিয়েই মায়ের মন্দিরে যাতায়াত করা হয়। গ্রাম্য কথায় এখনও বিশেষ বিশেষ অমাবস্যা তিথিতে বহিরাগত সাধকরা আরাধনা করার উদ্দেশ্যে উপস্থিত হন। কিন্তু দিনের আলো ফুটতেই তাদের আর দেখতে পাওয়া যায় না। দিনের বেলা এই মন্দিরে পৌঁছলেও একটি গা ছমছমে ব্যাপার লক্ষ্য করা যায় ঘন জঙ্গল এবং নিস্তব্ধতার কারণে।
বিশেষ বিশেষ কয়েকটি তিথিতে জাঁক জমক পূর্ণভাবেই মায়ের আরাধনা করা হয়। তবে কালীপুজো উপলক্ষে রাত্রি বেলাতে মায়ের আরাধনা করা হয়। এই মন্দিরে এবং পরবর্তী দিন সমস্ত গ্রামবাসীর অন্নের ভোগের ব্যবস্থাও করা হয় মন্দির প্রাঙ্গনে। এই পুজোকে ঘিরে গ্রামবাসীদের উন্মাদনা তো থাকে চোখে পড়ার মতো। কিন্তু মায়ের মাহাত্ম্য দিকে দিকে এতটাই প্রচলিত হয়ে উঠেছে ফলে ঝাড়খন্ড বীরভূম সহ একাধিক জেলা থেকে পূর্ণার্থীরা মা সিদ্ধেশ্বরী কালীকে দর্শন করার জন্য এই মন্দির প্রাঙ্গনে উপস্থিত হয়।