আরও পড়ুন: সাস্টেনেবল মৎস্য চাষ কী? জানতে নন্দীগ্রামে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা
পরিবারে আয়ের উৎস বলতে মায়ের পাওয়া পেনশেনের সামান্য ক’টা টাকা। যা দিয়ে বর্তমানে কোনওক্রমে দিন চলে গেলেও ভবিষ্যতের কথা ভেবে নিজে কিছু করার চেষ্টা করছেন প্রদীপ্তা মৈত্য। নিজের পায়ে দাঁড়ানোর পথ হিসেবে তিনি বেছে নিয়েছেন হাতের কাজকে। পুঁতি দিয়ে বিভিন্ন প্রকারের মেয়েদের হ্যান্ড ব্যাগ তৈরি করেন। এই প্রসঙ্গে প্রদীপ্তা দেবী বলেন, আমার স্বর্গত দিদি এগুলো করত। তার কাছ থেকে দেখেই এগুলো শেখা। তারপর সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখে আরেকটু ভালভাবে শিখেছি। আড়াই বছর হলএই কাজ করছি। পার্স, বোট শেপের ব্যাগ, নিউ কাটের ব্যাগ বানাই। এছাড়া বিভিন্ন ছোট ছোট হান্ড ব্যাগ তৈরি করি। হাতল লাগিয়ে সেই ব্যাগ বিক্রি করি।
advertisement
এই মহিলা আরও জানিয়েছেন, এই সমস্ত ব্যাগ তৈরির উপকরণ হিসেবে তিনি বিভিন্ন মাপের পুঁতি, সুতো, সুচ, কাপড় ইত্যাদি ব্যবহার করেন। কিন্তু কেন হঠাৎ এই কাজ করছেন তিনি? সেই প্রসঙ্গে বছর ৪৮-এর প্রদীপ্তা মৈত্য জানিয়েছেন, তিনি খানিকটা নিজের মানসিক শিল্প চাহিদা থেকে এবং বাকিটা স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য এই কাজ শুরু করেছেন। তাঁর তৈরি ব্যাগগুলি নিজের পরিচিত লোকজন, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয় স্বজনদের মধ্যেই বিক্রি করেন। তাঁর তৈরি ছোটো ব্যাগগুলির দাম শুরু হয় আড়াইশো টাকা থেকে। তারপর সাড়ে তিনশো, তার থেকে বড়গুলি সাড়ে চারশো। এবং সবথেকে বড়মাপেরগুলি সাড়ে পাঁচশো টাকায় বিক্রি করেন।
পারিবারিক নানান সমস্যা প্রতিকূলতাকে পেরিয়ে দেরিতে হলেও নিজের স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টায় ব্রতী হয়েছেন বর্ধমান শহরের এই মহিলা। সমাজের অন্যান্য মহিলাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কঠিন পরিস্থিতি আসতেই পারে। কিন্তু সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে হবে। সৎ পথে থেকে যে কোনো উপায়ে রোজগার করাটাই ভাল। তাতে যদি এইরকম হাতের কাজ দিয়ে উপার্জন করা যায়, সেটাও ভাল।
আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F
পুঁতি দিয়ে বিভিন্ন প্রকারের ব্যাগ ছাড়াও তিনি নানান ধরনের জুয়েলারিও তৈরি করেন। তিনি জানিয়েছেন কেউ তার নিজের পছন্দ বা ডিজাইন অনুযায়ী ব্যাগ বানানোর বরাত দিলে তিনি তাও বানিয়ে দেবেন। বর্ধমানের প্রদীপ্তা দেবী চান তাঁর এই কাজ আরও অনেক মানুষের কাছে পৌঁছাক। তাতে একদিকে যেমন তাঁর হাতের কাজের কদর হবে, ঠিক তেমনই বেশ খানিকটা আর্থিক সঙ্গতিও হবে। যা দিয়ে তিনি পরিবারের পাশে দাঁড়াতে পারবেন।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী