দামোদর নদীর পশ্চিম পাড়, বর্তমান যেটি তাজপুর। গ্রামের একাংশ তখন কাঁটাযুক্ত ঘন বেতের জঙ্গল। সেই জঙ্গলে জমিদার বাড়ির কামধেনু গাই যেত নিয়ম করে। লোক মুখে শোনা যায়, কামধেনু গাই প্রতিদিন একটি শিলা মূর্তিতে দুধ দিয়ে আসত। স্বপ্নাদেশে জানতে পারেন পাথর খণ্ডটি আসলে পঞ্চশীরের শিবমূর্তি। তারপর স্বপ্নাদেশে সেই স্থানে জমিদার মন্দির নির্মাণ করে মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন। সেকাল থেকে একাল পর্যন্ত বেশ কিছু অলৌকিক ঘটনার সাক্ষী স্থানীয় মানুষ।
advertisement
আরও পড়ুনঃ কিছুক্ষণের মধ্যেই ধেয়ে আসছে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ প্রবল ঝড়বৃষ্টি, সর্তকতা জারি করল হাওয়া অফিস
বর্তমানে ফুলেশ্বর বাবা প্রায় ১৪-১৫ ফুট গভীরে অবস্থান করছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মহাদেব ধীরে ধীরে পাতালে প্রবেশ করছেন। কেন কী ভাবে এই ঘটনা ঘটে চলেছে, তা কারও জানা নেই। প্রতিদিন দু-বেলা পুজো হয় নিয়ম মেনে। দুপুরে মধ্য গগনে সূর্য অবস্থান হলে। তার রশ্মি বাবার মাথায় পড়লে তবেই পুজো শুরু হয়। এ ভাবেই চলে সারা বছর। তবে নীল ষষ্ঠীর দিন জাঁকজমক করে পুজো হয়। এ দিন বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হয় অভিষেক। সেই অভিষেকে যা ঘটনা ঘটে তা গা শিউরে ওঠার মতোই।
আরও পড়ুনঃ আজ ফের প্রবল ঝড়-বৃষ্টি তছনছ করবে, কতদিন তোলপাড় হবে আবহাওয়া? জানুন পূর্বাভাস
অভিষেকের দিন ভক্ত ও সন্ন্যাসীরা বাবার মাথায় কয়েকশো ঘরা জল, ডাব, দুধ এবং গঙ্গাজল ঢালেন। বিস্ময়কর ঘটনা হল সর্বশেষ মূল সন্ন্যাসী বাবার মাথায় জল ঢালেন। সেই জল ঢালার পর বাবার কৃপায় চরণামৃত উঠে আসে পাতাল থেকে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বাবার মন্দিরের অন্দরে কোথা থেকে কী ভাবে জল বা চরণামৃত হল, তা জানা নেই কারও। বাবা ধীরে ধীরে পাতালে প্রবেশ করছেন। যত নিচে নামছে গ্রামবাসীও বাবার দর্শন পেতে মাটি খনন করে চলেছে। খনন করতে করতে বর্তমানে প্রায় পনের ফুট গভীরে পৌঁছেছে।
আজও বছরের নির্দিষ্ট সময় মন্দিরের ভিতরে জল এসে জমা হয়। কোথা থেকে কীভাবে এই জল আসে কৌতূহল তো রয়েছে। লোকমুখে এমনও প্রচলন রয়েছে এই মন্দিরের ভিতরে নাকি জোয়ার ভাটা খেলে। রহস্যজনক ভাবে মন্দিরের ভিতরে জলের উচ্চতা এবং গ্রামের অন্যান্য পাতকুয়া বা জলাশয়ের উচ্চতা কখনই সমান থাকে না। ফুলেশ্বর মন্দিরের জল খানিকটা উচ্চতায় থাকে। স্থানীয় মানুষ জানায়, বন্যায় যখন মন্দির চত্ত্বর গ্রাম প্লাবিত, তখনও মন্দিরের ভিতরে জল বাইরে উপচে আসেনি। বাবার কৃপায় এমনই বেশ কিছু অলৌকিক ঘটনা যা সকলকে ভাবিয়ে তোলে।
১৫-২০ বছর আগে মন্দির সংস্করণ শুরু হয়। কংক্রিটে ঢেকে দেওয়া হয় দেয়াল মেঝের সমস্ত কিছু। কাজ সম্পন্ন হলে অনেকেরই প্রশ্নচিহ্ন জেগে ছিল মনে। এ বার মন্দিরের ভিতরে জল আসবে কী ভাবে? কিন্তু সময় আসতে, বাবার কৃপাতে নিয়ম মেনেই এক এক করে সমস্ত কিছুই ঘটে চলেছে। নীল ষষ্ঠীর দিন জাঁকজমক পুজোর আয়োজন। দূর-দূরান্ত থেকে আসেন ভক্তরা। মন্দিরের সামনে রয়েছে আটচালা এবং মন্দিরের ডানদিকে অবস্থিত নীলাদ ঘর। নীলের দিন যেখানে বসত বাজনার আসর।জানা যায়, বাবার দর্শন পেতে ১৫-২০ বছর আগে খনন করা হয়েছিল। সে সময় বাবার মূর্তি প্রায় দু-ফুট উচ্চতায় জেগে ছিল। ধীরে ধীরে গভীরে প্রবেশ করেছেন ফুলেশ্বর বাবা। এখন ভূমির সঙ্গেই মিশে রয়েছে বাবা, শুধু মাত্র পঞ্চশির জেগে।
রাকেশ মাইতি





