ঘরে অভাব, স্ত্রী, বাচ্চা, সংসার নিয়ে সারাদিন বেশ কষ্টই কাটে তার। কাঠ দিয়ে যেমন মনের মতো সুন্দর সুন্দর ফার্নিচার গড়ে তুলতে পারেন, তেমনই স্বপ্নকেও তিনি এক একটি দিন গড়ে তুলছেন নিজের মতো করে। ওয়েট লিফটার হতে চাওয়া এই যুবক এখন সকাল থেকে সন্ধ্যা ফার্নিচার গড়েন। বিকালে করেন অনুশীলন। দুহাতে তুলতে পারেন বেশ কয়েকশো কেজি ডাম্বেল। অভাবের সংসারে বড় হয়ে ওঠা। জঙ্গলমহলের এই যুবকের পেশা কাঠের মিস্ত্রি। অভাবের সংসার টানতে প্রতিদিনই কাজে যেতে হয়। কিন্তু তার স্বপ্ন বড় ওয়েট লিফটার হওয়ার। ওয়েট লিফটিং করে দেশকে পৌঁছে দেওয়া দশের কাছে। কিন্তু বাধা সামর্থ্য, অর্থের অভাব। তবে অদম্য তার মনের জোর। নিজের পেশাগত কাজের পর নিজের ইচ্ছেতেই অনুশীলন করে সে। অনুশীলনের সময়ে কয়েকশো কেজি ওয়েট লিফটিং করতে পারেন তিনি। যেমন তার সুঠাম চেহারা, তেমনই তার সুন্দর ব্যবহার। তবে সংসারের পাশাপাশি স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলেছে সে।
advertisement
জঙ্গলমহল পশ্চিম মেদিনীপুরের এমনই এক যুবক কার্তিক ভূঁইয়া। তিনি অংশ নিয়েছেন জেলা এবং রাজ্যের একাধিক টুর্নামেন্ট। ঝুলিতে রয়েছে পুরস্কারও। কিন্তু সেই পুরস্কার-সম্মান তো আর সংসার চালাবে না! সংসার চালাতে ভরসা কাঠের কাজ করে দিন মজুরি রোজগার করা। ছোট থেকেই তার নেশা ওয়েট লিফটিং করা। স্কুল জীবন থেকেই তিনি ধরেছেন সংসারের হাল। ২০০০ সাল থেকে নিজেকে সুস্থ রাখার তাগিদেই শুরু ওয়েট লিফটিং। সেই মতো নিজেকে এক এক করে তুলে ধরেছেন। সকাল থেকে রাত এক করে স্বপ্ন দেখে যাচ্ছেন তিনি। প্রতিদিন সকাল থেকে প্র্যাকটিস, দৌড় কিংবা শরীর চর্চা করেন তিনি। এছাড়াও সপ্তাহে অন্তত তিনদিন তিনি ওয়েট লিফটিং করেন।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
বেশ কয়েক বছর ধরে তাকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন বেলদার বাসিন্দা বিব্রত মিশ্র। তিনি একা প্রায় দু’কুইন্টালেরও বেশি ওজন তুলতে পারেন দুই হাতে। সামান্য সাহায্যে সেই ওজনের পরিমাণ দাঁড়ায় আড়াই কুইন্টালেরও বেশি। কার্তিকের ইচ্ছে দেশের পাশাপাশি বিদেশে গিয়ে দেশের নাম উজ্জ্বল করা। মনের জোর নিয়ে এগিয়ে চলেছে সে। সারাদিনের হাড় ভাঙানি পরিশ্রমের পর তার অনুশীলন চালিয়ে যায় সে। সমাজ তার অনুপ্রেরণা, তবে জঙ্গলমহলের এই যুবকের স্বপ্ন আদৌ কী পূরণ হবে, তা বলবে সময়।





