দিনটি ছিল ২০০৭ সালের ১০ নভেম্বর। সেদিন পুলিসকে নিষ্ক্রিয় রেখে গ্রামবাসীদের উপরে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। শোরগোল ফেলে দেয় বিমান বসুর ‘নন্দীগ্রামের নতুন সূর্যোদয়’ মন্তব্য। বছর বছর এই দিনটিতে নন্দীগ্রাম ফিরে যায় ২০০৭ সালে। এ দিন বিজেপি ও তৃণমূলের আলাদা আলাদা সময়ে কর্মসূচি। শুভেন্দুর সভা বিকেলে। তার আগে তৃণমূল প্রভাবিত ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির সভা সকালে। এই অনুষ্ঠানেই তৈরি হয় বিশৃঙ্খলা। একদল রে রে করে তেড়ে যায়। তাঁদের প্রশ্ন, কেন বিজেপি থেকে যাঁরা তৃণমূলে এসেছেন, তাঁদের বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কেন তাঁদের মঞ্চে তোলা হয়েছে।
advertisement
আরও পড়ুন: সূত্র এসে গিয়েছে হাতে, মানিকের আর 'রক্ষা' নেই! জেলে রেখেই 'খেলা' শেষ করতে চাইছে ইডি
আরও পড়ুন: বিরাট খবর! এবার চিটফান্ড কাণ্ডে তৃণমূল নেতাকে তলব CBI-এর! তোলপাড় বাংলা
মঞ্চে তখন পূর্ব মেদিনীপুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। তাঁর সামনেই চলে তুমুল বিক্ষোভ। বেধে যায় ধস্তাধস্তি। ক্ষোভ সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় তৃণমূল নেতৃত্বকে। মঞ্চ থেকে নেমে কুণাল ঘোষ পরিস্থিতি শান্ত করেন'। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের বক্তব্য, অস্বীকার করার জায়গা নেই যে বিরোধ হয়েছে। কিন্তু কেউ ছেড়ে তো যায়নি'। তবে মঞ্চ থেকে কুনাল ঘোষ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, 'যাঁরা এসব পণ্ড করতে পাঠিয়েছে তাদের বলে রাখছি, এই ধরনের যদি কাজ এখানে হয়, তবে বিজেপির মঞ্চ উপড়ে ফেলে দিয়ে আসবো'। শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধেও সুর চড়ান কুণাল।
পাল্টা শুভেন্দুও একহাত নেন। তৃণমূলের কাজিয়া প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কুণাল প্রসঙ্গে কটাক্ষ,' কলকাতা থেকে চোরকে পাঠিয়েছে নন্দীগ্রামে। শহিদ স্মরণে এক ঝুড়ি লোক এনে আবার ধরনাতেও বসেছিলেন। পালিয়ে গেলেন কেন? থাকলে শহিদ বেদীর সামনের পুকুরে ছুড়ে ফেলে দিত'। এক সময় ঘাসফুলের মঞ্চের সামনে থেকে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে গো ব্যাক স্লোগান ওঠে। তৃণমূল কর্মীদের হাতেও তখন ‘শুভেন্দু গো ব্যাক’ পোস্টার। তা নিয়ে শুভেন্দু বললেন, কলকাতা থেকে পোস্টার ছাপিয়ে নিয়ে এসেছে। নন্দীগ্রাম কাকে চায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়েই তা প্রমাণ করেছে'।
ক্ষুব্ধ তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগ শুনতে মাইক্রোফোন এগিয়ে দেন কুণাল ঘোষ। শুভেন্দুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তৃণমূল কর্মীরা'। শুভেন্দু অধিকারীকেও এদিন দেখা যায় কুণাল প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মাইক্রোফোন সভায় আসাদের সামনে এগিয়ে দিতে। তখন কুণাল চোর, কুণাল চোর বলে স্লোগান দেন বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। এভাবেই নন্দীগ্রাম দিবসকে সামনে রেখে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক পারদ চড়ল জমি আন্দোলনের আঁতুড়ঘর নন্দীগ্রামে।
ভেঙ্কটেশ্বর লাহিড়ী