মূলত সমুদ্র ও নদীতে মাছের সুষ্ঠ প্রজনন, মাছেদের বড় হওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সময় দেওয়া এবং সামুদ্রিক মাছ সংরক্ষণ কারণেই বছরে দু’মাস মাছ ধরতে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি থাকে। এই সময় মাছ ধরা আইনত বেআইনি। যদিও বরাবরই এক শ্রেণির মৎস্যজীবী নিয়মের তোয়াক্কা না করেই নদী ও সমুদ্রে মাছ ধরেন। এবারেও সেটা দেখা যাচ্ছে। রাজ্যের বৃহত্তম সামুদ্রিক মৎস উৎপাদন ক্ষেত্র দিঘায় এমনই আইন ভাঙার বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে। অবশ্য শুধু দিঘা নয়, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে ছবিটা প্রায় একই।
advertisement
আরও পড়ুন: এই গরমে যখন তখন লোডশেডিং! দম বেরিয়ে যাওয়ার জোগাড় এখানকার মানুষের
আর এই কারণেই ব্যান পিরিয়ডে থাকা মৎস্যজীবীরা মাছ ধরার মরশুমে ক্ষতির আশঙ্কা করছে। মৎস্যজীবীদের কথায়, ৬১ দিন মাছ ধরা বন্ধ থাকলেও নজরদারির অভাবে মাছ ধরা কখনওই পুরোপুরি বন্ধ হয় না। যন্ত্রচালিত নৌকা ও ভুটভুটি নিয়ে অনেকেই ব্যান পিরিয়ডের সমুদ্রে বেআইনিভাবে মাছ ধরে। এর ফলে মরশুমে মাছের সঠিক উৎপাদন বজায় থাকে না। ক্ষতির মুখ দেখতে হয়।
এই বিষয়ে মৎস্য দফতরের কাঁথির দায়িত্বপ্রাপ্ত সহ মৎস্য অধিকর্তা (সামুদ্রিক) নীলোৎপল কয়াল বলেন, এই বিষয়ে আমাদের কাছেও অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ১৫ জুন থেকে সমুদ্রে মৎস্য শিকার শুরু। তার আগে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে অনেকেই নিয়ম না মেনেই মাছ ধরছেন। তাঁদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।’
ব্যান পিরিয়ডে প্রশাসনের নজর এড়িয়ে বেশ কিছু মৎস্যজীবী ভুটভুটি- সহ যন্ত্র চালিত নৌকো নিয়ে মাছ ধরা শুরু করেছে সমুদ্রে। সমুদ্রের ধারেই চলছে মাছের নিলাম। মেরিন ড্রাইভ লাগোয়া পূর্ব মুকুন্দপুর গঙ্গা মন্দির প্রাঙ্গনে দিঘা মোহনায় নোঙর করা আছে এই বেআইনি মৎস্য শিকারী ভুটভুটি, নৌকাগুলো। কিছুটা দূরে দূরে রুলি, তাপড়া, তোপসে, চিংড়ি, ভোলা মাছের পসরা সাজিয়ে বসে অসাধু মৎস্যজীবীরা। সেখানে জড়ো হয়ে গেছেন বিভিন্ন পাইকার আর আড়ৎদাররা। চলছে নিলামের হাঁক-ডাক। তবে এই ছবি শুধু দিঘার নয়, জুনপুট, জলধা, শৌলা, দাদনপাত্রবাড় সব জায়গায় এভাবেই সক্রিয় অসাধু মৎসজীবীরা। ব্যান পিরিয়ড শেষ হওয়ার আগেই এভাবে মাছ শিকার মরশুম শুরু হওয়ার পর মাছের উৎপাদনে ঘাটতি তৈরি করবে বলে সবার আশঙ্কা।
সৈকত শী