উড়ছে জাতীয় পতাকা। ভিড়ে ঠাসা বর্ধমান স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্য়াটফর্ম। সবাই বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের সঙ্গে সেলফি, ছবি তুলতে ব্যস্ত। এককোণে দাঁড়িয়ে সুনিতা কুমারী। তাঁর গর্বের মাত্রাটা কেউ আঁচ করতে পারেননি। বন্দে ভারতের চালকের আসনে যে তাঁরই স্বামী। বিহারের বাসিন্দা অনিল কুমার বর্তমানে বর্ধমানের লোকো সারদাপল্লিতে পরিবার থাকেন।
আরও পড়ুন: আরও ১২ কিলোমিটার! জোকা তারাতলা মেট্রোয় সওয়ার হয়ে 'বড়' ঘোষণা রেলমন্ত্রীর! বেঁধে দিলেন 'সময়সীমাও'
advertisement
সুনীতা কুমারী জানান, ১৯৯০ সালে রেলের অ্যাসিন্ট্যান্ট ড্রাইভার হিসাবে কাজে যোগ দেন অনিল কুমার।বরাবরই কর্মপ্রিয় অনিল কুমারের লক্ষ্য ছিল সবথেকে গুরত্বপূর্ণ ট্রেনগুলি চালানো। বিভিন্ন মেল,এক্সপ্রেস চালানোর পাশাপাশি পূর্বা, কালকা, শতাব্দী, রাজধানী এবং দুরন্ত এক্সপ্রেস চালানোর অভিজ্ঞতাও রয়েছে তাঁর। আর এই দীর্ঘ অভিজ্ঞতার সুবাদেই এলো এই মুহূর্তে দেশের সবথেকে দ্রুত গতির ট্রেন বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালানোর সুযোগ। তাও আবার একেবারে এ রাজ্য়ে ট্রেন উদ্বোধনের দিনেই।
চলতি মাসের ৭ তারিখে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালানোর জন্য স্পেশ্য়াল ট্রেনিংয়ের জন্য উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদে যান অনিল কুমার। ট্রেনিং শেষে ১৯ তারিখ তিনি বর্ধমানের বাড়িতে ফিরে আসেন।
আরও পড়ুন: মাত্র ৬২৮ টাকায় চড়া যাবে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে, উদ্বোধনেরই আগে টিকিটের দাম জানাল রেল
অনিল কুমারের স্ত্রী সুনীতা কুমারী আরও জানান, স্বভাবতই বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের মতো ট্রেন চালানোর সুযোগ তাঁর স্বামীর কর্মজীবনে অন্য়তম বড় প্রাপ্তি। তাই একদিকে যেমন বন্দে ভারত ট্রেন দেখার ইচ্ছা ছিল তেমনই স্বামীর চাকরি জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তের সাক্ষী হওয়ার তাগিদেই স্টেশনে এসে দাঁড়িয়েছিলেন স্ত্রী।
গতকাল রাতে হাওড়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন অনিল কুমার, এ দিন দুপুরে বর্ধমান স্টেশনে স্বামীকে দেখার জন্য় অপেক্ষা করেছিলেন সুনীতা কুমারী। যখন রেলের ঐতিহাসিক মূহুর্তে তিনি যেমন সামিল হতে পেরেছেন তেমনই অন্যদিকে যে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস কে কেন্দ্র করে এই উন্মাদনা ও উচ্ছ্বাস, পূর্ব রেলের সেই প্রথম বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের চালক তাঁর স্বামী অনিল কুমার। তবে সুনীতা কুমারী বলেন, প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত থাকলে আরও বেশী আনন্দ হত। তবে দূর থেকে দেখা হলেও কথা হয়নি।স্বামীর কাঁধে কতটা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব, তা জেনেই ট্রেনের খুব কাছে যাওয়ার চেষ্টা করেননি সুনীতা। তিনি শুধু বলেন, 'ওনাকে যখন স্টেশনে উপস্থিত মানুষজন ফুল ও মিষ্টি দিয়ে সংবর্ধনা দিচ্ছিল, সেটা দেখে গর্ব হচ্ছিল।'