হাওড়া সিটি পুলিশ, তারা বিশেষভাবে সক্ষম শিশুদের মাধ্যমে পথ নিরাপত্তা সচেতনতা বৃদ্ধি, অসহায় বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের দেখভালের দায়িত্ব পালন করছে। সেই সঙ্গে এবার স্কুলছুট ও পথশিশুদের শিক্ষাদান। এই উদ্যোগে শিশুশ্রম এবং অসামাজিক কাজকর্মে শিশু বয়স থেকে যুক্ত হওয়ার প্রবণতা কমবে। শিশুশিক্ষা বা পাঠ দানে পুলিশ দিদিরাই এই উদ্যোগের নাম দিয়েছেন ‘বারান্দায় রোদ্দুর’। হাওড়া সিটি পুলিশের মহিলা থানার বারান্দায় প্রতিদিন বসছে স্কুল।
advertisement
আরও পড়ুন: ঠেলায় পড়তেই মুখ বাঁচাতে ব্যস্ত প্রশাসন! তড়িঘড়ি গর্ত বোজানো শুরু হাওড়ার এই রাস্তায়
২০২৪ সালের ১১ মার্চ হাওড়া সিটি পুলিশের কমিশনার এই উদ্যোগ শুরু করেছিলেন মাত্র ২৫ জন শিশুকে নিয়ে। মাত্র এক বছরে সেই সংখ্যা বেড়ে ৫৪। যার মধ্যে ৫১ জনকে ইতিমধ্যেই স্কুলে ভর্তি করানো সম্ভব হয়েছে। তাই রীতিমত উচ্ছ্বসিত হাওড়া মহিলা থানার কর্মী-আধিকারিকরা। প্রতিদিন বিকেলে রামকৃষ্ণপুরের আশপাশের এলাকার পিছিয়ে পড়া পরিবারের শিশুরা আসে এই পাঠশালায়। উদ্দেশ্য একটাই প্রত্যেক শিশুর জন্য শিক্ষার অধিকার সুনিশ্চিত করা।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
রাস্তার ধারে থাকা যে সমস্ত শিশু স্কুলে যায় না, স্কুলছুট, ভিক্ষাজীবী বা নেশা করে, তাদেরই অনেককেই ধরে এনে থানায় পড়াশোনা শেখান পুলিশ দিদিরা। তাঁরা মনে করেন, শিক্ষার আলো পেলে এরা আর এসব কিছুই করবে না। শুধু পড়াশোনাই নয়, শিশুদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নিয়মিত আসছেন চিকিৎসকরা। পাশাপশি চলছে সংস্কৃতি চর্চাও। করা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মহিলা থানার বারান্দায় শিশুরা ঠিকমতে পড়াশোনা করছে কি না তা মাঝে মাঝেই দেখতে আসছেন হাওড়ার পুলিশ কমিশনার প্রবীণ কুমার ত্রিপাঠী।
বছরখানেক আগে কয়েকজন মাত্র শিশুকে মহিলা থানায় ধরে এনে পড়াশোনা শেখানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। সেই উদ্যোগই বর্তমানে নিয়মিত পাঠশালায় রূপান্তরিত হয়েছে। প্রতিদিন বিকেল সাড়ে চারটে বাজলেই স্কুলের মতে নিয়ম করে থানার বারান্দায় মেঝেতে এসে বইখাতা নিয়ে এসে বসে পড়ছে তারা। তাদের কারো বাবা রিকশাচালক, মা গৃহপরিচারিকা। এতদিন সন্তানদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখলেও অন্ধকার কীভাবে কাটবে জানা ছিল না। মহিলা থানা তাঁদের আশার আলো দেখাচ্ছে।
পড়াশোনার শেষে থানা থেকে রোজ রাতের খাবারও নিয়ে যাচ্ছে শিশুরা। শিশুদের নিয়মিত এই খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন হাওড়ার পুলিশ কমিশনার। নিয়মকরে রবিবার ছুটিও থাকছে। হাওড়া সিটি পুলিশ শিশুদের শিক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং তাদের ভবিষ্যৎ উন্নত করতে সাহায্য করছে।
রাকেশ মাইতি