পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল মহকুমায় রয়েছে বীরসিংহ গ্রাম। সেখানেই জন্মেছিলেন পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। ছোট থেকে জীবন অতিবাহিত করেছেন সেখানে, পড়েছেন কালী কান্তের পাঠশালায়। মায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত করেছেন বিদ্যালয়। তবে বীরসিংহ গ্রামে ছিল না বিদ্যাসাগরের পূর্ব পুরুষদের বাড়ি। কোথায় ছিল ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের আদি বাসস্থান? কোথায় থাকতেন তার পূর্বপুরুষেরা?
advertisement
ভারতের শিক্ষা জগতের নবজাগরণের অন্যতম প্রবাদপ্রতিম প্রাণপুরুষ পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। যিনি স্বাক্ষর করতেন ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় শর্মা নামে। বর্ণপরিচয় লেখার পাশাপাশি যিনি আর্ত পীড়িত মানুষদের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতেন। বিপদে আপদে ছুটে যেতেন। সে বিদ্যাসাগর জন্মেছিলেন ঘাটালের বীরসিংহ গ্রামে। তাই বলা হয় বীরসিংহের সিংহ শিশু। জানেন পূর্ব পুরুষদের ঠিকানা পশ্চিম মেদিনীপুর নয়, ছিল হুগলিতে!
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের পূর্বপুরুষদের আদি বাসস্থান হুগলি জেলার বনমালীপুরে। সেখান থেকে বীরসিংহে উঠে আসে বিদ্যাসাগরের বাবা মায়েরা। এখানেই জন্মেছেন বিদ্যাসাগর। বিদ্যাসাগর তার জীবনচরিতে লিখছেন, “বীরসিংহগ্রামে আমার জন্ম হইয়াছে; কিন্তু, এই গ্রাম আমার পিতৃপক্ষীয় অথবা মাতৃপক্ষীয় পূর্ব্ব পুরুষদিগের বাসস্থান নহে। জাহানাবাদের (অধুনা আরামবাগ) ঈশান কোণে, তথা হইতে প্রায় তিন ক্রোশ উত্তরে, বনমালীপুর নামে যে গ্রাম আছে, উহাই আমার পিতৃপক্ষীয় পূর্ব্ব পুরুষদিগের বহুকালের বাসস্থান।”
অত্যন্ত সম্ভ্রান্ত পরিবারে বিদ্যাসাগরের জন্ম। বাবা ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতায় স্বল্প বেতনে চাকরি করতেন। সেই কারণে ঈশ্বরচন্দ্রের শৈশব বীরসিংহেই তার মা ও ঠাকুরমার সঙ্গে অতিবাহিত হয়। এই গ্রামেই বড় হয়ে ওঠা। সমাজের নানা ব্যাধি দূর করতে ঝাঁপিয়ে পড়া। নিজের অর্থের টাকায় করতেন সমাজ সংস্কারের কাজ।
মেদিনীপুর থেকে কলকাতায় আসার পথে মাইল ফলক দেখে শিখে ফেলেন ইংরেজি সংখ্যা। লিখেছেন বর্ণপরিচয়, বীর সিংহের প্রতিষ্ঠা করেন বিদ্যাসাগরের মায়ের নামে বিদ্যালয়। তবে বিদ্যাসাগরের জীবনের ইতিবৃত্ত নিয়ে রয়েছে নানা অজানা কাহিনী।