চিরাচরিত তাঁতের শাড়ির চাহিদা কমে রেশম বা সিল্কের শাড়ির কদর বেড়েছে। সবমিলিয়ে বিলুপ্তির পথে রামজীবনপুরের তাঁতশিল্প।ফলে সারা বছর সংসার চালাতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে তাঁত শিল্পীদের। এই পরিস্থিতিতে পুজোর আনন্দ উদ্দীপনা বলে কিছুই অবশিষ্ট বলে নেই জানিয়েছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: বন্যার ছবি মুছে ঘাটালে এবার অপারেশন সিঁদুর! গোটা ব্যাপারটা জানতে দেখুন
advertisement
উপার্জন না থাকায় নতুন প্রজন্ম আর তাঁত শিল্পে আসতে চাইছে না। ফলে পাড়ি দিচ্ছে ভিন রাজ্যে। ১১ টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনার রামজীবনপুর পুরসভা।বহু পুরোনো এই পুরসভার তাঁত শিল্পের জন্য বিশেষ পরিচিতি রয়েছে। দশকের পর দশক ধরে বংশপরম্পরায় রামজীবনপুরের তাঁত শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিল এখানকার শতাধিক পরিবার। এর উপর ভর করেই এই শিল্পের সাথে যুক্ত পরিবারগুলির সদস্যদের চলত জীবন জীবিকা। বর্তমানে রামজীবনপুরের এই ঐতিহ্যবাহী শিল্পের করুণ দশা, প্রায় বন্ধের মুখে দাঁড়িয়ে। বলা চলে ধুঁকছে।
একসময় রামজীবনপুর পুরসভার ১ থেকে ৫ নম্বর ওয়ার্ড জুড়ে ঘরে ঘরে হাতে তৈরি তাঁতের মেশিন ও শিল্পের রমরমা ছিল। সেই রমরমা আর নেই।বর্তমানে ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে বহু পুরোনো ঐতিহ্যের তাঁত শিল্প। তাও হাতে গোনা কয়েকটি পরিবার এই কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ আগে এই তাঁত শিল্পের সঙ্গে এলাকার অধিকাংশ পরিবার যুক্ত ছিল। কিন্তু তাঁত শিল্পে আগের মত আর রুজি রোজগার না মেলায় অনেকেই ভিন্ন পেশা বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন।
আরও পড়ুন: ফুটবলার তৈরির কারখানা! উদীয়মান খেলোয়ারদের সামনে সুবর্ণ সুযোগ
বর্তমানে ছবিটা একেবারেই পাল্টে গেছে। হাতেগোনা কয়েকটি পরিবার ছাড়া নিস্তব্ধতা রামজীবনপুরের তাঁতিপাড়ায়। সুতির শাড়ির কদর না থাকায় সুতোর জোগান বন্ধ করে দিয়েছে মহাজন। বর্তমানে রেশমের সিল্কের তাঁত শাড়ি তৈরির প্রচলন শুরু হয়েছে রামজীবনপুরের তাঁতি পাড়ায়। যারা ধৈর্য সময় ব্যায় করে ডিজাইনের উপর তাঁতের শাড়ি তৈরি করতে পারছে তারা কিছু টাকা পাচ্ছে। কিন্তু যারা সাধারণ তাঁতের শাড়ি তৈরি করছে তাদের মজুরি কম। ফলে পুজোর আগে তাঁত শিল্পীদের চোখে মুখে আক্ষেপের সুর। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হলে সরকারের এগিয়ে আসা প্রয়োজন বলে মনে করছে এখানকার শিল্পীরা।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
তাঁত শিল্পীদের পরিস্থিতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল রামজীবনপুরের পুরপ্রধান। এই শিল্পের করুণ দশা কী করে হল এবং তা পুনরুজ্জীবিত করতে হলে কী করনীয় তারও ব্যাখ্যা দিয়ে পুরপ্রধান বলেন, আমরা সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রীকে এনে ঘুরিয়ে দেখিয়েছিলাম। এই শিল্প বাঁচিয়ে রাখতে সরকারকে অবগত করেছি। আগামী দিনে আমরা এই নিয়ে সরকারকে আবারও বলব। এখন দেখার, প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে এই শিল্প টিকে যাবে, নাকি সময়ের নিয়মে কালের গর্ভে বরাবরের মতো তলিয়ে যাবে।