এই শহরে থেকেও তাঁদের জীবন জুড়ে শুধুই অন্ধকার। কারও বাবা-মা ভিক্ষাবৃত্তি করেন, কেউ আবার প্লাস্টিকের বোতল কুড়িয়ে সংসার চালান। কেউ কেউ ফুটপাথের দোকানে বাসন মেজে খাবার জোটান। এই সমস্ত পরিবারের ছেলেমেয়েদের দিনরাত রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো, ভিক্ষা করা বা নেশায় আসক্ত হয়ে পড়া নতুন কিছু নয়। এমন ছেলেমেয়েদের নিয়েই গীতার ভাবনা। ওঁদের জন্যই সংসার জীবনে আবদ্ধ না হয়ে লড়াই করে যাচ্ছেন তিনি।
advertisement
স্কুল জীবন থেকে এই লড়াই শুরু হয়েছিল। সেই সময় রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো শিশুদের সঙ্গে টিফিন ভাগ করে নেওয়া থেকে শুরু হয় এই যাত্রা। তারপর ধীরে ধীরে ওঁদের জন্য নিজের জীবন সঁপে দেন। গত ২৫ বছর ধরে হাওড়া শহর ও শহরতলির ছেলেমেয়েদের জীবনে আলো ফেরাতে শিক্ষাদান করছেন তিনি।
এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ শিশুদের শিক্ষা, সুরক্ষা ও স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর লক্ষ্যে কাজ করছেন গীতারা। তাঁদের সংগঠন শুধু পড়াশোনা শেখায় না, স্বাস্থ্য পরিষেবা, পুষ্টিকর খাবার, মানসিক পরামর্শ, নিরাপত্তা সুরক্ষা এবং সামাজিক মূল্যবোধ শেখানোর দিকেও সমানভাবে গুরুত্ব দেয়। তাঁদের বক্তব্য, শিক্ষা ছাড়াও এই শিশুরা অনেক সময় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়, ফলে পুনর্বাসনের কাজটিও সমান জরুরি।
সংগঠনের প্রধান কিশোর জয়সওয়াল জানিয়েছেন, প্রথমে মাত্র কয়েকজন শিশুকে পড়াশোনার আওতায় আনার মাধ্যমে কাজ শুরু হয়েছিল। ধীরে ধীরে স্থানীয় মানুষদের সহযোগিতা ও সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে আজ এই সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে। বর্তমানে বহু শিশু প্রাথমিক পাঠ থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষা অর্জনের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
সংগঠনের সদস্য গীতা রাও বলেন, অনেক শিশুই পরিবারে সহিংসতা বা দারিদ্র্যের কারণে রাস্তায় নেমে পড়ে। তাঁদের প্রয়োজনীয় যত্ন দিয়ে স্বাভাবিক পরিবেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করি আমরা। অনেকেই আজ কাজ করছে, কেউ আবার উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করছে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
গত ২৫ বছরে ‘টিয়ার্স’-এর উদ্যোগে বহু শিশুই পথছাড়া জীবন থেকে বেরিয়ে এসেছে। কেউ কেউ পেশাগত প্রশিক্ষণ পেয়ে চাকরির সুযোগও পেয়েছে। সংগঠনটি বর্তমানে বিভিন্ন সংস্থার সহায়তায় সচেতনতামূলক কর্মশালা, বই বিতরণ শিবির ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা ক্যাম্পও আয়োজন করে।





