TRENDING:

নৌকার উপর সেতু, ব্রিটিশ আমলের ঐতিহ্য...! জানেন কী? এই সেতুর উপর বিদ্যাসাগর ছাড়া আর কারও পারাপারের অনুমতি ছিল না!

Last Updated:

Ghatal Bhasapool: ঘাটাল শহরের প্রাণ শিলাবতী নদী আর তার বুকে ভাসাপুল যা আজও ঐতিহ্য বহন করে চলেছে। তবে ভারি বর্ষায় যখন শিলাবতী ফুঁসে ওঠে, কখনও কখনও বন্যার সৃষ্টি করে স্থানীয়দের জন্য তখন আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
পশ্চিম মেদিনীপুর: পশ্চিম মেদিনীপুর নানা ঐতিহ্যে মোড়া। জেলার মহকুমা শহর ঘাটালও স্বমহিমায়। সেখানেও রয়েছে নিদর্শন। ঘাটাল শহরের প্রাণ শিলাবতী নদী আর তার বুকে ভাসাপুল যা আজও  ঐতিহ্য বহন করে চলেছে, তবে ভারি বর্ষায় যখন শিলাবতী ফুঁসে ওঠে, কখনও কখনও বন্যার সৃষ্টি করে স্থানীয়দের জন্য তখন আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ঘাটালের ভাসাপুল, যা ‘পুনটুন ব্রিজ’ নামেও পরিচিত, একটি ঐতিহ্যবাহী ভাসমান সেতু যা শীলাবতী নদীর উপর নির্মিত। এটি ঘাটাল শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং পর্যটকদের কাছে একটি আকর্ষণীয় স্থান। ইংরেজ আমলে এই সেতুটি তৈরি হয়েছিল এবং কাঠের পাটাতন দিয়ে নৌকার উপর এটি স্থাপন করা হয়েছিল।
advertisement

দেশে তখন ইংরেজ শাসন চালাচ্ছে। রেলগাড়ি, যান্ত্রিক যানবাহন সেভাবে প্রচলিত ছিল না, তখন কলকাতা, হাওড়া, হুগলি জেলা এবং ঘাটাল সহ পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানের সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম ছিল শিলাবতী নদী। রূপনারায়ণ নদী রানীচক, কোলাঘাট এবং তমলুক হয়ে গেঁওখালিতে হুগলি নদীর সঙ্গে মিলিত হয়।হুগলি-রূপনারায়ণ-শিলাবতী নদী ছিল প্রধান পরিবহন পথ। এ পথে কলকাতা থেকে প্রয়োজনীয় মালপত্র আমদানি এবং ঘাটাল ও তার পশ্চিমাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে উদ্বৃত্ত পণ্য রফতানি করা হত। নৌকা, পানসি এবং স্টিমার ব্যবহার করে পণ্য এবং যাত্রী পরিবহন করা হত। পশ্চিম মেদিনীপুরের শিলাবতী নদীর তীরে গড়ে উঠেছিল বিদেশিদের আস্তানা, যা ঘাটালের ব্যবসা-বাণিজ্যের একটি প্রধান  কেন্দ্র হয়ে ওঠে। নীল চাষ থেকে রেশম ও মসলিনে অগ্রগতি তখন সবই সম্ভব হয়েছে এই ভাসাপুলের মাধ্যমে।

advertisement

আরও পড়ুন: ধেয়ে আসছে তুমুল বৃষ্টি…! চোখ রাঙাচ্ছে দামোদর, তড়িঘড়ি ফিল্ডে পুলিশ, যা করলেন এলাকায়

View More

শোনা যায় যে পন্ডিত বিদ্যাসাগর মহাশয়ের ভাসাপুলের উপর দিয়ে পারাপার করার অনুমতি ছিল। স্বদেশী আন্দোলন ও শিল্প বিপ্লবের পর ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ শিল্পে ভাটা পড়ে এবং ডাচরা ধীরে ধীরে বাণিজ্যে সংকোচন ঘটায়। ইংরেজদের প্রভাব বেড়ে যায় এবং তারা বিভিন্ন আইন প্রণয়ন করে। তারই ফল হিসেবে বেঙ্গল ফেরী এ্যাক্ট ১৮৮৫ এর ৬নং ধারা মোতাবেক, ১৯০৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর, পুলটি সাধারণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। স্বাধীনতা লাভের প্রায় ১৩ বছর পর, ১৯৬০ সালে শিলাবতী নদীর উপর আধুনিক প্রযুক্তির বিদ্যাসাগর সেতু নির্মাণ করা হয় যা ভাসাপুলের চাপ কমিয়েছে। যদিও এর উপযোগিতা নিয়ে আজ প্রশ্ন থাকতে পারে, ঘাটাল বললে প্রথমেই দৃশ্যপটে ভেসে উঠে ভাসাপুল। শিলাবতী নদীর ওপর তৈরি ভাসাপুল, যা আজও ঘাটাল শহরের ঐতিহ্যের প্রতীক।

advertisement

আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন

এই পুলটি অনেকবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাও এই ভাসাপুলের নানা ঐতিহ্য, আবেগ, ইতিহাসের সাক্ষী। ঘাটাল পুরসভা ভাসাপুলের রক্ষণাবেক্ষণ করে এবং বিভিন্ন দিনে আলোকসজ্জায় সজ্জিত করে। ২০০০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ভাসাপুলকে পর্যটন মানচিত্রে অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্ত নেয় এবং পরবর্তীকালে কেন্দ্রীয় হেরিটেজ কমিশন এটিকে হেরিটেজের মর্যাদা দেয়। ঘাটালের ঐতিহ্যবাহী  এই নিদর্শনটি দিনের পর দিন সকলের  হৃদয়ে উজ্জ্বল হয়ে থেকে যাবে।

advertisement

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
পরিবেশবান্ধব থিমে মণ্ডপের গাছপালা যেন জীবন্ত, কাঁপাচ্ছে চন্দননগরের আলো
আরও দেখুন

মিজানুর রহমান

বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
নৌকার উপর সেতু, ব্রিটিশ আমলের ঐতিহ্য...! জানেন কী? এই সেতুর উপর বিদ্যাসাগর ছাড়া আর কারও পারাপারের অনুমতি ছিল না!
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল