ছোট থেকে পড়াশুনা ছেড়ে লেগে পড়া বাঁশি নিয়ে। বাঁশের বাঁশিই তার ধ্যান-জ্ঞান। প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে গিয়ে রাজ্যস্তরের প্রতিযোগিতায়ও সমান তালে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড় থানার রেডিপুরের বাসিন্দা লক্ষ্মীকান্ত পাইকারা। তিনি একজন বংশীবাদক। অত্যন্ত গরীব পরিবার থেকে বড় হয়েছেন তিনি। মাত্র চতুর্থ শ্রেণি পড়ার পর বাঁশির প্রতি ঝোঁক থাকায় জীবনটা শুরু করেছিলেন বাঁশির সুরে। গ্রামেরই গুরুর কাছ থেকে তালিম নিয়ে শুরু বাঁশুরির জীবন।
advertisement
আরও পড়ুন: সংসার সামলে চুন তৈরি করছেন বাড়ির বধূরা
ছোট থেকে বাউলগান-সহ একাধিক সামাজিক অনুষ্ঠানে সুর তুলেছেন। রাত জেগে বিভিন্ন যাত্রাদলে নানান আবহ সৃষ্টি করেছেন লক্ষ্মীকান্ত। তবে এসব দিয়ে পেট চলে না। হাটে আনাজ নিয়ে বসতে হয় তাকে। শিল্পী আবার ব্যবসায়ী লক্ষ্মীকান্ত। তার সঙ্গে পরিবারের প্রধান। এমন কয়েকটি চরিত্রে জীবন মোড়া তার। তবু বাঁশি যে মানে না। একাই পা দিয়ে হারমোনিয়াম বাজিয়ে চলে বাঁশিতে সুর তোলা। বয়স যখন সবে ২০-র গোড়ায়। তখন শুরু কর্মজীবন। কলকাতা, হাইরোড, বেলদার বিভিন্ন যাত্রাদলে বাঁশির আবহ সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু দিন যত গড়িয়েছে, বাঁশির সুর আর জোগাতে পারেনি সংসার চালানোর অর্থ। ফলত সংসারের চাকা ঠেলতে ভরসা বিভিন্ন হাটে হাটে গিয়ে আনাজ বিক্রি করা। আর সঙ্গে দু একটা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেভাবেই বছর দশকের সেই লক্ষ্মীকান্ত আজ পঞ্চাশের দোরগোড়ায়।
আরও পড়ুন: ড্রাগন চাষে সাহায্য করছে দেশি মুরগি! কীভাবে হচ্ছে জানলে চমকে উঠবেন
শুধু ব্লকস্তর কিংবা জেলাস্তর নয় রাজ্যস্তরের যুব প্রতিযোগিতায়ও অংশ নিয়েছেন লক্ষ্মীকান্ত। জিতেছেন পদকও। সরকারিভাবে মাত্র শিল্পী ভাতাটুকুই জোটে। লক্ষ্মীকান্ত পাইকারা চান সরকারিভাবে সাহায্য করা হোক তাকে। নিদেনপক্ষে সরকারি অনুষ্ঠানগুলোতেও যেন ডাক পান তিনি। একই দাবি তাঁর স্ত্রীরও।
বয়সের ভারে রোগও থাবা বসিয়েছে লক্ষ্মীকান্ত বাবুর পরিবারে। ছেলে মেয়ে স্ত্রী সংসার।বাঁশিজুড়ে শুধু করুণ সুর। সরস্বতী আশীর্বাদ করলেও লক্ষ্মীকে তিনি ছুঁতে পারছেন না।
রঞ্জন চন্দ





