বর্ধমান শহরের বাসিন্দা আগমনী কুন্ডু। সকাল বেলা বর্ধমানের কালিবাজার এলাকায় রাস্তার পাশে বসে সবজি ও মাছ বিক্রি করেন তিনি। আর যা আয় হয় তা দিয়েই টেনেটুনে চলে সংসার। কিন্তু তিনি আজ হয়ে উঠেছেন বহু অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর কারণ। আজ থেকে ৩০ বছর আগে বিয়ে হয় তার। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই স্বামীকে সেই ভাবে পাশে পাননি। স্বামী নেশাগ্রস্ত। দিনের পর দিন সংসারে অভাব দেখতে দেখতে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল একটা সময়।
advertisement
এরপর রাস্তার ধারে সবজি ও মাছের ব্যবসা শুরু করেন। মেয়েদের বিয়ে দেন। খাবার অভাব, স্বামীর অত্যাচার পুরানো সেই দিনগুলি যেন আজও মাথা থেকে বের করতে পারেননি আগমনী দেবী। দু বেলা ভাল করে না খেতে পাওয়ার যন্ত্রনার কষ্ট চোখের সামনে জ্বলজ্বল করে তাঁর। সেই থেকেই ভাবতে থাকেন, অসহায় মানুষের জন্য কিছু করবেন। পরে হঠাৎ একদিন সামাজিক মাধ্যমে দেখতে পান কাটোয়ার কাজুলি বিশ্বাস নামের এক মহিলা নিজের কানের দুল বিক্রি করে অসহায় মানুষের মুখে অন্ন তুলে দিচ্ছেন। তা দেখে তাঁর মনেও জোর আসে।
আরও পড়ুনঃ আদিবাসী জনজাতির পাশে প্রশাসন! রাজ্য সরকারের পরিষেবা পৌঁছে দিতে পাঁশকুড়ায় ‘দুয়ারে শিবির’
অনুপ্রাণিত হয়ে মহালয়ার দিন থেকেই তিনিও শুরু করেন অসহায় মানুষগুলির মুখে হাসি ফোটানোর কাজ। নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী সপ্তাহে তিন দিন বাড়ি থেকে রান্না করে নিয়ে এসে ১৫ জন করে অসহায় মানুষের মুখে অন্ন তুলে দেন তিনি। অগমনী কুণ্ডু বলেন, “আমি নিজে রোজকার করি একটি দোকান চালাই, সেখান থেকে যা উপার্জন হয় সেই টাকা থেকেই এনাদের মুখে অন্ন তুলে দিচ্ছি। আমার অনুপ্রেরণা কাজরী দি। তিনি যদি কানের দুল বিক্রি করে করতে পারে আমি তো একটা ব্যবসা করি আমি কেন করতে পারব না। তাই আমি সপ্তাহে তিন দিন ১৫ জনের খাবারের ব্যবস্থা করি। ইচ্ছা আছে আগামী দিনে যাতে আরও মানুষের মুখে অন্ন তুলে দিতে পারি।”
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
মায়ের এই কাজে সঙ্গী তার এক মেয়ে। মায়ের কাজে গর্বিত তিনি। ছোট থেকেই দেখেছেন পরিবারে অন্নের অভাব ও কষ্ট তাই চান যাতে মা আগামী দিনে এভাবেই আরও এগিয়ে যাক। এভাবেই দেবীপক্ষে সূচনা হোক প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে।
আগমনী কুণ্ডু চান, তিনি যেমন কাজুরি বিশ্বাসকে দেখে এগিয়ে এসেছেন তাকে দেখেও যেন এগিয়ে আসে আরও মানুষ। যাতে তিনি আগামী দিনে হাসি ফোটাতে পারেন আরও বহু মানুষের মুখে।





