পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়ার তিয়াসা বটব্যাল, দারিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে এগিয়ে যাচ্ছেন। আর তার এই এগিয়ে যাওয়ার মাধ্যম হল নৃত্য শিল্প। গ্রামের স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনার পর ক্লাসিক্যাল নাচ নিয়ে পড়াশোনা করেন কলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ধ্রুপদী নৃত্যে ব্যাচেলার ও মাস্টার ডিগ্রি করেন। ছোটবেলায় তিয়াসার মা গান শেখাতে চেয়েছিলেন, কিন্তু বাড়ির আর্থিক পরিস্থিতি সঙ্গত দেয়নি। ফলে বাধ্য হয়ে নাচের স্কুলে পাঠায়। সেই নাচ তিয়াসা সহ তার পরিবারের আর্থিক পরিস্থিতি বদলে দিয়েছে।
advertisement
আরও পড়ুন: আতঙ্কের দিন শেষ! এবার নিশ্চিন্তে কাজ করতে পারবেন ভিবিডিসি কর্মীরা, কড়া নির্দেশ প্রশাসনের
এ বিষয়ে তিয়াসা বটব্যাল জানান, ‘ছোটবেলা থেকে মা চাইতো সাংস্কৃতিক পরিবেশে যেন বড় হয়ে উঠতে পারি। প্রথম পছন্দ ছিল গান। কিন্তু বাড়ির আর্থিক অবস্থার কারণে মা নাচের স্কুলে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নেন। তাতে সায় ছিল না বাবার। মা ও ঠাকুমার জেদের কাছে হার মানে বাবা। ভর্তি হই নাচের স্কুলে। ঠাকুমা পয়সা জমিয়ে কিনে দেন ঘুঙ্গুর। স্কুলে পড়াশোনার পাশাপাশি নাচ শেখা চলত। উচ্চ মাধ্যমিকের পর ধ্রুপদী নৃত্য নিয়ে ভর্তি হই রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। শনি রবিবার বাড়ি এসে ছাত্র-ছাত্রীদের নাচ শেখাতাম পড়াশোনার খরচ চালানোর জন্য।’
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
বর্তমানে তিয়াসার আর নাচের স্কুলে ৬০-৭০ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। নাচের স্কুল চালিয়ে এই বাবা চিকিৎসা ও সংসারের হাল ধরেছেন। এমনকি বানিয়েছেন পাকা বাড়ি। বাড়ি বানানোর উদ্দেশ্য মেয়েদের বাড়ি থাকে না সেই মিথ ভেঙে দিতে। তিয়াসার ছাত্রীরা সম্প্রতি একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের ড্যান্স রিয়ালিটি শোতে অংশগ্রহণ করে চাম্পিয়ান ও রানার্সআপ হয়েছে। আগামী দিনে তিয়াসা নাচকে কেন্দ্র জীবন এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। বর্তমানে একজন নাচের শিক্ষিকা হিসাবে তিয়াসা নৃত্যের ছন্দে বেঁধে নিয়েছে পরিবারের দায়-দায়িত্ব।