কলেজ শেষ করেই সংসার চালানোর চাপ এসে পড়ে শম্ভুর উপর। তাই বাধ্য হয়েই এগরার একটি পেট্রোল পাম্পে কাজ শুরু করতে হয় তাকে। সকালবেলা ঘুম ভেঙেই মাঠে দৌড়। বলের স্পর্শ, ঘণ্টার পর ঘণ্টা কঠোর অনুশীলন – এসব শেষ হওয়ার পরই শুরু হয় দিনের কাজ। পেট্রোল পাম্পে দাঁড়িয়ে সারাদিন কর্মব্যস্ততার মাঝেও ফুটবলের কথা মাথা থেকে একবারও বাদ পড়ে না।
advertisement
বাড়ি ফিরে আবার বিকেলে শুরু হয় নতুন অধ্যায়। আলো কমে এলেও হাতে ফুটবল, সামনে প্র্যাকটিসের মাঠ। প্রতিদিন একইভাবে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। কখনও শারীরিক ক্লান্তি, কখনও সংসারের দায়িত্ব, আবার কখনও অনিশ্চয়তাকে হারানোর চেষ্টায় অনড় শম্ভু। তাঁর প্রতিভা যে কতটা ধারালো, তা ছবিগুলো দেখলেই বোঝা যাচ্ছে। চোখ বন্ধ অবস্থায় পেনসিলের উপরে ফুটবল স্পিন করছেন – এ দৃশ্যই বলে দেয় কতটা একাগ্রতা আর দক্ষতার সঙ্গে অনুশীলন করেন তিনি। আবার কখনও চার ফুট লম্বা লাঠির উপর অনায়াসে ফুটবল স্পিন করছেন।
এমন স্কিল খুব একটা দেখা যায় না। গ্রামের মানুষও অবাক হয়ে দেখছেন শম্ভুর প্রতিভা। কিন্তু প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে বড় সমস্যা – পারিবারিক আর্থিক সঙ্কট। তাই কলকাতায় গিয়ে কোনও বড় কোচের কাছে প্রশিক্ষণ নেওয়া বা কোনও বড় প্রতিষ্ঠানে ট্রায়াল দেওয়ার মতো সুযোগ তার কাছে নেই। যে প্রতিভা বড় মঞ্চে পৌঁছতে পারত, তা অর্থের অভাবে যেন হারিয়ে যাচ্ছে।
তবুও হাল ছাড়ার পাত্র নয় শম্ভু। প্রতিদিনের এই কঠিন পথচলার মাঝেও স্বপ্নকে আঁকড়ে ধরে রাখাই তাঁর শক্তি। সংসারের চাপ, কাজের ব্যস্ততা, অনুশীলনের ক্লান্তি কোন কিছুই তাকে থামাতে পারে না। একদিন বড় ফুটবলার হওয়ার বিশ্বাস নিয়েই প্রতিদিন মাঠে নেমে ঘাম ঝরান তিনি।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
সামনে সুযোগ কম, বাধা বেশি। তবুও চেষ্টা থেমে নেই। গ্রামের মানুষও চায় তাঁর প্রতিভা যেন আরও বড় মঞ্চে দেখা যায়। শম্ভুর এই পথচলা তাই শুধু একটি যুবকের লড়াই নয়, নিজের প্রতিভাকে বিশ্বমঞ্চে প্রকাশ করার এক প্রচেষ্টা। গ্রাম গঞ্জের যে প্রতিভা অর্থের অভাবে দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে।





