বর্তমানেও আশ্রমের আবাসিকরা থাকে জরাজীর্ণ দোতলা মাটির বাড়িতে। দেওয়াল ফাটল ধরা। টালির ছাউনি বহু জায়গায় নষ্ট। বৃষ্টি হলে জল চুঁইয়ে পড়ে। বাঁশের চাদরেই ঠেকান ছাদের ভার। তবুও এখানেই থাকে মোট ৩৮ জন শিশু। তাদের দিনের বেশিরভাগ সময় কাটে মাটির এই জরাজীর্ণ ঘর, আঙিনা আর আশেপাশের সবুজ মাঠে।
আরও পড়ুনঃ গানেই মেলে দৃষ্টি! চলে ৬ জনের সংসার, অন্ধ তরণীর জীবনযুদ্ধ চোখে জল আনবে আপনার
advertisement
পড়াশোনা হয় পাশের খাগদা পল্লীশ্রী হাইস্কুল এবং খাগদা নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ে। আধুনিক কোনও পরিষেবায় নেই। বহু বছর ধরে সংস্কার না হওয়ায় পরিকাঠামো আরও ভগ্নদশায় পৌঁছেছে। তবুও আবাসিকের মধ্যে কোনও আক্ষেপ নেই। সবটাই তারা মানিয়ে নিয়েছে।
আশ্রম চালাতে নিত্যদিন লড়াই করতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। শিশু সদনের ভারপ্রাপ্ত সুপারিন্টেন্ডেন্ট গৌরহরি পাত্র জানালেন, “ছেলেমেয়েদের খাবার জোগানোই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। নিজেদের বাগানে আনাজ চাষ করি। পুকুরে মাছ চাষও করি। কিন্তু তাতেও সবটা সামলান যায় না।” বাইরে থেকে সাহায্য কমে গিয়েছে। সরকারি অনুদানও খুব সীমিত। অসুস্থ হলে কাছাকাছি কোনও ভাল চিকিৎসা কেন্দ্র নেই। একমাত্র ভরসা স্থানীয় হাতুড়ে ডাক্তার।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
তবুও আশ্রমের আবাসিকরা আশা হারায়নি। গ্রামীণ পরিবেশ তাদের মনকে স্বস্তি দেয়। নিজেরাই তৈরি করেছে বাগান। সকালে উঠেই তারা কাজে লেগে পড়ে। কেউ বাগানে জল দেয়। কেউ পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতা করে। আর বিকেলে মাঠে খেলাধুলো। রাতে পড়াশোনা আর গল্পের আসর। উৎসব-পার্বণেও নিজেদের মতো করে আনন্দে মেতে ওঠে তারা।
আশ্রমের চারপাশে থাকা সবুজ গাছপালা, বড় উঠোন আর নিজেদের গড়া বাগানই তাদের আশ্রয়। বহু কষ্টের মধ্যেও এই শিশুরা হাসিখুশি। নতুন দিনের স্বপ্ন দেখছে তারা। আশ্রম কর্তৃপক্ষের আশা—একদিন সরকারি ও সামাজিক সাহায্যে বদলে যাবে এই অনাথ আশ্রমের চেহারা। আধুনিক পরিকাঠামো যুক্ত নানান সুযোগ সুবিধায় বড় হবে এই ৩৮ জন শিশু।





