এ বছরটাই যেন মৎস্যজীবীদের কাছে কাল বছর হয় দাঁড়িয়েছে। বারবার তারা সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছেন আর বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছে গভীর নিম্নচাপ। মৎস্য দফতর থেকেও নির্দেশ মৎস্যজীবীদের মৎস্য শিকার বাদ দিয়ে পাড়ে ফিরে আসতে হবে। বহু টাকা খরচ করে মৎস্য শিকার বেরোলেও সে টাকাই তুলতে পারেননি তারা। মৎস্য শিকার বাদ দিয়ে পারে ফিরে আসতে হয়েছে। এই ছবি পূর্ব মেদিনীপুরে উপকূলীয় এলাকার দিঘা মোহনা, শংকরপুর, তাজপুর, পেটুয়াঘাট প্রায় সব জায়গায়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ট্রলার মালিকরা। কারণ প্রতিবার সমুদ্রে পাড়ি দিতে গিয়ে জ্বালানি তেল, বরফ, খাবার, জাল ও শ্রমিক মজুরির পিছনে খরচ হয়েছে হাজার হাজার টাকা। কিন্তু মাঝপথে সমুদ্র ছেড়ে ফিরে আসতে হওয়ায় সেই খরচের সামান্য অংশও ওঠেনি।
advertisement
পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘা মোহনার এক ট্রলার মালিক জানিয়েছেন, “প্রতি ট্রিপে হাজার হাজার টাকা খরচ হয়। কিন্তু নিম্নচাপের জন্য বারবার ফিরে আসতে হয়েছে খালি হাতে। এখন ট্রলারের ঋণ শোধ করা দায় হয়ে পড়েছে। অনেকে ধারদেনা করে ব্যবসা শুরু করেছিলেন, কিন্তু এই বছর আমরা প্রায় সর্বস্বান্ত।” মৎস্যজীবীরাও জানিয়েছেন, আগের বছর যেভাবে নিয়মিত সমুদ্রে গিয়ে মাছ ধরতেন, এবার তা সম্ভব হয়নি। ফলে তাদের মাসিক আয়ও কমে গিয়েছে অর্ধেকের বেশি।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
অন্যদিকে, বাজারে সামুদ্রিক মাছের অভাবে ব্যবসায়ীরা হিমঘরের মাছ বিক্রি করছেন চড়া দামে। সমুদ্রে মাছ ধরার উপর বারবার নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায় জোগান কমে গেছে। সেই সুযোগে অনেকেই পুরনো মাছ বা ফ্রিজে রাখা মাছ বিক্রি করছেন বেশি দামে। এতে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। যদিও ব্যবসায়ীদের দাবি, “আমরাও বাধ্য, জোগান না থাকলে দাম কমানো যায় না।” সব মিলিয়ে বলা যায়, এবছর একের পর এক নিম্নচাপ শুধু মৎস্যজীবীদের জীবিকাই নয়, গোটা সামুদ্রিক মাছের বাজার ব্যবস্থাকেই নাড়িয়ে দিয়েছে।





