বর্তমানে চিকিৎসক পি করণের কাছে রয়েছে প্রায় কোটি টাকার বাইক! মোট পাঁচটি বাইক রয়েছে। তার মধ্যে চারটেই সুপার বাইক। কোনও টার দাম ১০ লাখ তো কোনওটি ২৪ লাখ। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমার কাছে রয়েছে কাওয়াসাকি নিঞ্জা জেড এক্স টেন আর, এটার দাম প্রায় ২৪ লক্ষ টাকা, বিএমডাবলু এস থাউজেন আরআর, যার দাম প্রায় ২৭ থেকে ২৮ লক্ষ টাকা। আরও রয়েছে হণ্ডা সিবিআর সিক্স ফিফটি আর, এটার দামও সব নিয়ে ১৪ লক্ষ টাকা, এমটি ফিফটিন যার দাম প্রায় ২ লক্ষ টাকা, আর একটা আছে কাওয়াসাকি ভার্সিস সিক্স ফিফটি, এটার দামও প্রায় ১০ লক্ষ টাকা।”
advertisement
আরও পড়ুনঃ লাইন দিয়ে কাদা কিনছেন লোকজন, বিক্রি হচ্ছে ভালই দামে! কেন? কাটোয়ার কাণ্ড শুনলে মাথা ঘুরে যাবে
তাঁর কলকাতা এবং কাটোয়া শহরে বাড়ি থাকলেও আদি বাড়ি ঘাটালে। গ্রামেরই একটি স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস। তারপর প্রথম চেষ্টাতেই জয়েন্টে সুযোগ। মেডিক্যালে সুযোগ পেয়ে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। সেখান থেকে এমবিবিএস পাস করেন। তারপর ১৯৯৪ সালে প্রথম চাকরিতে যোগদান। তারপর তিনি চাকরি করতে করতেই স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হন কলকাতার পিজি হাসপাতাল থেকে। বর্তমানে তিনি কাটোয়া হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার গাইনোকলজিস্ট।
আরও পড়ুনঃ অপেক্ষা আর কিছুদিনের! শ্রাবণের ২৫-এ বর্ধমানেশ্বরের জলাভিষেক! কাটোয়াতে ভাগীরথীর ঘাটে ভক্তদের ভিড়
চিকিৎসক পি করণকে তাঁর এই শখ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “শখ ছোট থেকেই ছিল, যখন খুবই ছোট ছিলাম তখন খেলনা গাড়ি কিনে চালাতাম। তখন দামি গাড়ি কেনার সামর্থ্য ছিল না। মনের মধ্যে ছোটবেলা থেকেই গাড়ি, বাইক এগুলোর শখ ছিল। আজকে ভগবানের কৃপায় সেই সামর্থ্য হয়েছে। তাই শখগুলো এখন মিটিয়ে নিচ্ছি কারণ আরও একটু বয়স বাড়লে এই শখ আর মেটানো যাবে না। ভারি ভারি গাড়ি একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর আর চালানো যাবে না। তাই এখন সময় থাকতে এগুলো নিয়েছি।”
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
প্রদীপ বাবুর কথায়, অনেকে কোটি টাকার বাড়ি কেনেন, ফ্ল্যাট কেনেন এমনকি বছরে দু-তিনবার বিদেশ ভ্রমণও করেন। তবে তিনি সেসব না করে শুধুমাত্র নিজের শখ পূরণের জন্য বাইকের পিছনে টাকা বিনিয়োগ করেন। পরিবারের তরফে বাধা এলেও তিনি শুনতে নারাজ। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, “পরিবার তো বাধা দেবেই কিন্তু সব শুনলে কি হবে? পরিবারের কথা সব শুনলে হবে না। নিজেরও শখ আহ্লাদ আছে। আমি পরিবারের কোনও কিছু অভাব রাখিনি। সব যদি পরিবারের পিছনে খরচ করে দিই তাহলে আমি নিজের সুখ শান্তির জন্য কি করব?”
আজকের দিনে অধিকাংশ মানুষ স্বপ্নকে শুধু স্বপ্ন হিসেবেই রেখে দেয়। কিন্তু চিকিৎসক পি করণ দেখিয়েছেন যদি ইচ্ছে থাকে, তবে প্রতিটি স্বপ্নই বাস্তবের রূপ নিতে পারে। সকাল থেকে রাত অবধি রোগীদের সেবা করেও তিনি তাঁর স্বপ্নকে মরতে দেননি। রোগীর কষ্ট লাঘবের জন্য যেমন তাঁর হাতের কাজ অমূল্য, তেমনই জীবনের আনন্দ খুঁজে নেওয়ার জন্যও তিনি সমান দক্ষ। তিনি প্রমাণ করেছেন বয়স কেবলই একটি সংখ্যা। জীবনে নিজের কাজের প্রতি নিষ্ঠা ও শখের প্রতি ভালোবাসা থাকলে, দুটোকেই একসঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।